ভাগ্নের ভয়ে নিজ গৃহে পরবাসী বৃদ্ধ হারুনুর রশিদ! (ভিডিও)

|

আশি ঊর্ধ্ব সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ যেন নিজ গৃহেই পরবাসী। ভাগ্নের ভয়ে ভিটেতে যেতে পারছেন না এই বৃদ্ধ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার শিমরাইল গ্রামে মামার জমি দখল করে অন্যায়ভাবে ভোগ করে আসছে বিপ্লব।

ভুক্তভোগী বৃদ্ধের স্ত্রী জাহানারা বেগম জানান, হারুনুর রশিদের সেই বাড়ি ও আশেপাশের জমি দখল করে আছে তার ভাগ্নে রাশেদ বিল্লাহ বিপ্লব। ভিটেতে থাকা তো দূরের কথা, এখন সেখানে যেতেও পারেন না বয়স্ক এই দম্পতি। জাহানারা বেগম বলেন, বিপ্লব অত্যাচার শুরু করেছে। দুই-তিনবার মারার হুমকিও দিয়েছে তার মামাকে। সম্পত্তি, বাড়িঘর যা আছে, তার সবই সে এখন নিয়ে যেতে চাইছে। জোর-জবরদস্তি, মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার স্বামীকে হয়রানি করছে। আমাদের হয়রানি করছে। আমরা সেখানে গিয়ে কোনোদিন শান্তি পাইনি।

প্রবীণ হারুনুর রশিদের অভিযোগ, তার ভাগ্নে রাশেদ বিল্লাহ বিপ্লব ও তার মা ১৯৯৫ সাল থেকে জোর করে জমিটি দখলে নিয়েছে। তারা সেখানে বাড়ি নির্মাণ, জমি বর্গা দেয়া, গাছ কাটাসহ নানাভাবে ভোগদখল করে আসছে। হারুনুর রশিদ বলেন, আমার এই ভাগ্নে তার মা, পরিবারসহ বাড়িঘর তুলে জমি দখল করে আছে। আমার আর কোনো সম্পত্তি নেই। শুধু চাকরি করেছি। শহরে ছিলাম। ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করিয়েছি। আর এখন, ভাগ্নে আমার জায়গাজমি, বাড়ি দখল করেছে; তারা নাকি মালিক! সে মামলা করেছে আমার নামে। সেই মামলা চলছে।

প্রতিবেশীরাও বললেন, জোর করেই মামা হারুনের জমি দখল করে আছে ভাগ্নে বিপ্লব। মামা জমি ফেরত চাইলে উল্টো তাকে হুমকি দেয়ার কথাও জানালেন স্থানীয়রা। বিপ্লবের প্রতিবেশী জাহিদ জানান, কয়েকদিন আগে হারুনুর রশিদ এসেছিলেন। তাকে বসতেও দেয়া হয়নি। হারুনুর রশিদ জানিয়েছিলেন, তিনি দুই কক্ষের একটি ঘর তুলতে চেয়েছিলেন এখানে। কিন্তু বিপ্লব শুনে নাকি উড়িয়ে দেন এই কথা। বলেন, তারা এখানে আসলে কোপাবো।

বাড়িতে গিয়ে অভিযুক্ত ভাগ্নে রাশেদ বিল্লাহ বিপ্লবকে পাওয়া না গেলেও তার স্ত্রী রিতা আক্তার দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন, জোর করে কোনোকিছুই দখল করি নাই। আমার স্বামী ১৯৭১ সাল থেকে এখানে আছেন। তার জন্ম এখানে। তিনি এখানেই থাকেন। জোর করে কোনো দখলের কিছুই হয়নি। তারা তো এখানে আসেইনি।

অবসরের পর যেখানে নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করার কথা, সেখানে নিজের জমি ফিরে পাওয়ার যুদ্ধে নেমেছেন ৮৫ বছরের এই বৃদ্ধ। শেষ বয়সে নিজের ভিটেমাটি ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন অসহায় হারুনুর রশিদ।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply