মাতৃত্বকালীন ভাতা চাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

|

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে কার্ডের মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন ভাতা চাওয়ায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তার মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ২০ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা নারীর মা। এর আগে ১৪ জানুয়ারি বিকালে উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের এ অভিযোগ উঠেছে উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাজী মো. সালাউদ্দিন মাতাব্বরের বিরুদ্ধে। তিনি ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মারধরের স্বীকার অন্তঃসত্ত্বা নারী হুমায়রা খান (২০) ও তার মা মায়া বেগম (৪০)। তাদের বাড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পুটিয়া গ্রামে।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও থানায় লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হুমায়রা খান চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাই সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম হুমায়রাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেবে বলে কাগজপত্র নেন। পরে ১৪ জানুয়ারি হুমায়রা খানকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেবে বলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানায়। দুপুরে ভাতার জন্য গেলে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মাতাব্বর তার ভাতার কার্ডটি ছিঁড়ে ফেলে। এই ঘটনা হুমায়রা খানের মা মায়া বেগম জানতে পেরে বিকেলে মা-মেয়ে আবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে যান। ভাতার কার্ডটি ছিঁড়ে ফেলার বিষয়টি চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মাতাব্বর হুমায়রা ও মায়াকে থাপ্পড়, কিল-ঘুষি, লাথি মারেন। এছাড়া শরীরের কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ করা হয়। এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন তারা। পরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন মায়া বেগম।

মায়া বেগম বলেন, আমার মেয়ের ভাতার কার্ডটি ছিঁড়ে ফেলে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মাতাব্বর। প্রতিবাদ করায় আমাকে ও মেয়েকে থাপ্পড়, কিল-ঘুষি, লাথি মেরেছে। এছাড়া শরীরের কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন চেয়ারম্যান। আমি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার বিচার দাবি করছি।

বিষয়টি অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মাতাব্বর মোবাইলে ফোনে বলেন, এ বছর আমার ইউনিয়ন থেকে সরকারিভাবে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবে ৩০ জন মা। কিন্তু দরখাস্ত পড়েছে প্রায় ৩০০। যাদের বয়স হতে হবে ২০ থেকে ৩০ বছর। কিন্তু হুমায়রার বয়স ছিল কম। হুমায়রা আমাকে বিভিন্নভাবে গালিগালাজ করেছে শুনেছি। বিকেলে যখন পরিষদ থেকে যাচ্ছিলাম, তখন আমি রাস্তায় তাকে দেখি। আমাকে দেখে দৌড়ে পালায় সে। আমি এ টুকুই জানি।

ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহালুল খান বাহার বলেন, নারায়নপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এক নারী একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply