শেরপুরে বেগুনের দরপতন, অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন কৃষকরা

|


শেরপুরে ব্যাপক আবাদ হয়েছে বেগুনের। কিন্তু, বাম্পার ফলনে যেখানে কৃষকের মুখে হাসি ফোটার কথা, সেখানে উৎপাদন খরচই উঠছে না! পাইকারি মোকামে বেগুন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকায়। অথচ উৎপাদনে ব্যয় হয়েছে এর দ্বিগুন। চাষীদের অভিযোগ, বাজার ব্যবস্থাপনার সংকটে পানির দরে বেগুন বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ক্ষুব্ধ হয়ে কেউ কেউ গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন বেগুন।

শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নে যতদূর চোখ যায়, ক্ষেতজুড়ে দেখা মিলে শুধু বেগুনের আবাদ। বাম্পার ফলন মন জুড়িয়েছিলো চাষীদের, জাগিয়েছিলো বুকভড়া আশা। মৌসুমের শুরুতে মনপ্রতি ১২শ’ থেকে ১৪শ’ টাকা কেজিতে বেগুন বিক্রি হলেও, হঠাৎই সে দর গিয়ে ঠেকেছে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায়। এতে লাভ তো দূরে থাক, উৎপাদন খরচই উঠবে না বলে দাবি কৃষকদের।

একজন বেগুনচাষী বললেন, এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর, এখন সেই বেগুন বিক্রি করে ১৬ বা ১৭ হাজার টাকার বেশি আসছে না। সারের দাম, তেলের দাম সব মিলিয়েও খরচের তিনভাগের একভাগও উঠছে না।

হতাশ হয়ে কেউ বেগুনের ব্যবহার করছেন গো খাদ্য হিসেবে। কৃষকের অভিযোগ ৫ কেজির দাম দিয়ে, ৭ কেজি করে বেগুন নিচ্ছেন পাইকররা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাইকাররা। তারা বলছেন, সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় মোকামে দরপতন হয়েছে।

একজন পাইকার বলেন, আমাদের অবস্থাও বিশেষ ভালো না। ৪০০ টাকা দিয়ে এক মণ বেগুন কিনে ৪০০টাকাতেই বিক্রি করতে হচ্ছে। উপরন্তু, প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে যাতায়াত বাবদ।

এ পরিস্থিতিতে একই ক্ষেতে বিকল্প ফসল আবাদের পরামর্শ কৃষি বিভাগের।

এ প্রসঙ্গে শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, আসলে এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের কোনো ম্যাকানিজম নাই। কারণ, কৃষি বিভাগের কাজ হলো উৎপাদন বাড়ানো। সেজন্য, আমরা কৃষকদেরকে উৎসাহ ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেই।

প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে শেরপুরে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলার চরাঞ্চলেই হয়েছে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply