সবুজ পতাকা তুলে মেট্রোরেল চলার সংকেত দিলেন প্রধানমন্ত্রী

|

প্রথম যাত্রী হিসেবে টিকিট কেটে মেট্রোরেলে চড়লেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো বহুল কাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেল। তার আগে দুপুর দেড়টার দিকে সবুজ পতাকা তুলে মেট্রোরেল চলার সংকেত দেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে বেলা ১টা ৫৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী মেট্রোরেল যাত্রা শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার বোন এবং জাতির জনকের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। তিনিও টিকিট কেটে মেট্রোরেলে ওঠেন। বিরতিহীন যাত্রা করে ২১ মিনিটের মধ্যে আগারগাঁও স্টেশনে এসে থামে ট্রেনটি।

উল্লেখ্য, উত্তরা উত্তর স্টেশনে দুটি ট্রেন ছিল। এর মধ্যে প্রথম ট্রেনটি বেলা ১টা ৩৯ মিনিটে পতাকা তুলে চলাচলের সংকেত দেন প্রধানমন্ত্রী। পরের ট্রেনটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম যাত্রী হন তিনি।

এর আগে, বেলা ১১টা ৫মিনিটে মেট্রোরেলের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের সি ব্লকের খেলার মাঠে মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

সুধী সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী উত্তরা উত্তর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে যান। সেখানে সবুজ রঙের পতাকা উড়িয়ে ও ফিতা কেটে মেট্রোরেলের চলাচল উদ্বোধন করেন তিনি। বেলা ১টা ৫৩ মিনিটে উত্তরা-উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম যাত্রী হিসেবে মেট্রোরেলে ওঠেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তার জন্য সংরক্ষিত আসনে বসেন। এসময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাত্রী হিসেবে আরও ছিলেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, মাদ্রাসা শিক্ষক, ইমাম, অন্যান্য ধর্মযাজক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধি, পোশাক শ্রমিক, রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক, দোকানি/বাদাম বিক্রেতা/সবজি বিক্রেতা, মেট্রোরেলের শ্রমিক, প্রতিরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী, কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী, একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। সবমিলিয়ে দুই শতাধিক মানুষ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম মেট্রোরেল ভ্রমণ করছেন।

উল্লেখ্য, মেট্রোরেলের স্বপ্নযাত্রা শুরু হয় ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক সভায় এ মেগা প্রকল্পটির অনুমোদন দেন। ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল লাইন (উত্তরা-মতিঝিল) নির্মাণ কাজ ২৬ জুন ২০১৬ সালে শুরু হয়।  আজ এ লাইনের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন হলো।

মেট্রোরেল দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার আরেকটি সংযোজন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর পরে মেট্রোরেল করে জনগণের জন্য আরেকটি মাথার মুকুট সংযোজিত করা হলো বলেও জানান শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে সুধী সমাবেশে এসব কথা জানান তিনি। বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের একটি মাইলফলক মেট্রোরেল। পঙ্গু অসহায় বয়স্ক যাত্রীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেলে নারী যাত্রীদের জন্য ওয়াশরুম ও শিশুদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার তৈরি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, হলি আর্টিজেনে যে জাপানি নাগরিকরা নিহত হয়েছিলেন তাদের স্মরণে মেট্রো স্টেশনের নাম ফলক থাকবে। যানজট নিরসন করা হবে বলে নির্বাচনী ইশতেহার দেয়া হয়েছিল, তা এর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হলো। এ সময় নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করায় ভোটার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply