জার্মানিতে অভ্যুত্থানচেষ্টা; পার্লামেন্টে হামলার পরিকল্পনা ছিল বিদ্রোহীদের

|

বিবিসি থেকে নেয়া ছবি।

জার্মানিতে ব্যর্থ হওয়া অভ্যুত্থান পরিকল্পনা যেনো সিনেমার গল্পকেও হার মানাচ্ছে। সরকার উৎখাতে নেতৃত্ব দেয়া রাইশব্যুর্গার নামের সংগঠনটির লক্ষ্য প্রজাতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রথা বাতিল করে দেড়শ বছর আগের জার্মান সাম্রাজ্য পুন:প্রতিষ্ঠা করা। উগ্র ডানপন্থী গোষ্ঠীটির সদস্য তালিকায় রয়েছেন বিচারপতি, পার্লামেন্ট ও রাজপরিবারের সদস্যসহ জার্মানির হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিরাও।

বার্লিন থেকে প্রায় তিনশ কিলোমিটার দূরের ছোট্ট শহর ব্যাডলবস্টেইনে অবস্থিত প্রিন্স ক্যাসেল। শত বছরের পুরনো ওই প্রাসাদেই হয়েছিলো অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা।

এ পরিকল্পনা জানার পর পুরো জার্মানির ১৩০টি স্থানে চালানো হয় তল্লাশী অভিযান। সরকার উৎখাতের এ ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িতদের করা হচ্ছে গ্রেফতার। এখন পর্যন্ত আটককৃতদের অধিকাংশই জার্মানির এলিট সমাজের হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিত্ব। জার্মান রাজপরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে, বিচারপতি, ধনকুবের এমনকি সাবেক সেনা কর্মকর্তারাও আছেন গ্রেফতারের তালিকায়।

এ প্রসঙ্গে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেইজার বলেন, জার্মান গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা ধ্বংস করাই তাদের লক্ষ্য ছিলো। আরও বিস্তারিত তদন্ত হলেই নিশ্চিত হওয়া সম্ভব যে এ সংগঠনের সাথে আরও কারা কারা জড়িত আছে। তবে শুরুতেই যাদের নাম এসেছে তারাই যথেষ্ট দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে পড়েছে আমাদের জন্য।

এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২১ সাল থেকেই সরকার উৎখাতের এ পরিকল্পনা করছিলো জার্মান উগ্র ডানপন্হী সংগঠন ‘রাইখ সিনিজেন মুভমেন্ট’ বা রাইশব্যুর্গার। গেল এপ্রিলে জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লটারবাখকে অপহরণের পরিকল্পনা করে সংগঠনটি। তাদের লক্ষ্য ছিলো, দাঙ্গা-সহিংসতার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতায় যাওয়া। রাইশবুর্গারের সদস্যরা প্রজাতন্ত্র কিংবা গণতন্ত্র নয় বরং নিজেদের জার্মান সাম্রাজ্যের নাগরিক বলে দাবি করে।

তাদের দাবি, ১৮৭১ সালের জার্মান সাম্রাজ্যের সীমানাই আসল জার্মানি। এ গোষ্ঠীটি বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রতত্ত্ব ও বর্ণবাদী প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে থাকে।

আটককৃতদের সম্পর্কে জার্মান চিফ প্রসিকিউটর পিটার ফ্র্যাংক বলেন, জিজ্ঞাবাসবাদে আটককৃতরা জানিয়েছেন যে- সহিংসতার মাধ্যমে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা ছিলো তাদের। তাদের মূল লক্ষ্য ছিলো- পার্লামেন্টে হামলা চালিয়ে তা দখল করা।

এদিকে, প্রাথমিকভাবে উগ্র ডানপন্হী গোষ্ঠীটির প্রায় ৫০ সদস্যের তালিকা পেয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। যাদের মধ্যে কয়েকজন ইতালীয় নাগরিক। তাদের খোঁজেও অভিযান চলছে বলে জানা গেছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply