নির্বাচন ঘিরে তৎপর পশ্চিমা কূটনীতিকরা: দলগুলোর বিবাদের ফলে বাড়ছে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ

|

মাহফুজ মিশু:

অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে বড় দলগুলো একমত না হতে পারায় রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, মূলত নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য আর বিনিয়োগ নিরাপদ করতেই এ দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চান পশ্চিমারা। চলমান রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করে তাদের ধারণা, গত দুইবারের চেয়ে ভিন্ন হতে পারে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন।

ভোটের বছর খানেক বাকি থাকতেই তৎপরতা বেড়েছে ঢাকার পশ্চিমা কূটনীতিক ও উন্নয়ন সহযোগীদের। নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সুষ্ঠু আর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন তারা।

এছাড়া, প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সাথে চলছে নিয়মিত আলোচনা। এর বাইরেও ভোট নিয়ে হরহামেশাই কথা বলছেন তারা। প্রশ্ন হলো, নির্বাচনের মতো ইস্যুতে বিদেশি কূটনীতিকরা কেন এত সক্রিয়?

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, যেসব দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সমস্যা, সেসব দেশে বিদেশিরা কথা বলে। এখানেও সেটা বলার সুযোগ পাচ্ছে। বিদেশিদের দোষ দিলে তো হবে না, যে যখন বিরোধী দলে থাকে, তখন তাদের কাছে গিয়ে ধর্ণা দেয়। তারা এতটুকু জানে যে, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সাধ্য আমাদের নাই। কারণ, আমরা তাদের ওপর নির্ভরশীল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, যেহেতু তারা আমাদের এখানে বিনিয়োগ করে, তাদেরও কনসার্ন থাকবে; এটা বরং বাস্তবসম্মত। রাজনৈতিক দলগুলো একটা অবস্থান নিতে পারতো, তারা তো পারেনি। তারাই এই পক্রিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ভারতের এনআরসি নিয়ে কথা বলুক তো! পারবে, সেটি বলতে?

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক নানা বৈঠক করছেন বিদেশিরা। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে সক্রিয় ভূমিকা ছিল পশ্চিমা দূতদের। বিদেশিদের এমন অবস্থানে নাখোশ সরকার। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে কী বিদেশিদের প্রভাব আরও বাড়বে? কিংবা তার ফলে কী কোনো পরিবর্তন হতে পারে নির্বাচনী ব্যবস্থায়?

এ ব্যাপারে ড. সাব্বির আহমেদ বলছিলেন, আমার মনে হয় যে, এবার নির্বাচনের চিত্রটা ভিন্ন হতে পারে। এটার কিছু লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলকে স্পেস দিয়েছে। বিএনপি যদি বড় ধরনের ভুল না করে, আমার মনে হয় এই স্পেস নির্বাচন পর্যন্ত থাকবে।

আর তৌহিদ হোসেন বলেন, কতটুকু চাপ আছে, সেটা আমি জানি না। বিদেশিদের সরাসরি হস্তক্ষেপে কোনো কাজ হয়নি। পেছনের চাপ কতটুকু থাকবে এবং সেই চাপ নিতে কতটুকু বাধ্য হবে সরকার; এছাড়া তো হবে না।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply