বিদেশি শ্রমবাজার পুরোপুরি সৌদি নির্ভর হয়ে পড়েছে, একক নির্ভরতায় ঝুঁকি বাড়ছে

|

আলমগীর হোসেন:

পুরোপুরি সৌদি আরব নির্ভর হয়ে পড়েছে বিদেশি শ্রমবাজার। চলতি বছরের ১০ মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে সাড়ে ৯ লাখ মানুষের। এরমধ্যে শুধু সৌদি আরব গেছে সাড়ে ৫ লাখ কর্মী। যা প্রবাসে কর্মসংস্থানের প্রায় ৬০ ভাগ। একক বাজারের ওপর নির্ভরতায় ঝুঁকি বাড়ছে অভিবাসন খাতে।

সৌদি আরবের পরের অবস্থানে আছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দুই দেশ, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক শহীদুল আলম জানান, বিকল্প দেশে যাওয়ার সুযোগ আছে। তবে নিকট আত্মীয় এবং ধর্মীয় প্রবণতার কারণেই দেশটিতে যাবার আগ্রহ বেশি কর্মীদের।

আর জনশক্তি রফতানিকারকরা বলছেন, সৌদি আরব বরাবরই সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার। তবে একক বাজারের ওপর নির্ভরতার ঝুঁকিও আছে। কোনো কারণে সমস্যা দেখা দিলে সংকটে পড়বে পুরো অভিবাসন খাত। তাই বিকল্প বাজার বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তারা। যদিও প্রশ্ন আছে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতার উন্নয়ন নিয়ে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক কে এম মোবারক উল্লাহ শিমুল বলেন, এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করি। যেকোনো মুহূর্তে তো সংকট দেখা দিতে পারে। সৌদি বড় শ্রমবাজার হওয়ায় নজর দেয়া উচিত। তবে, অন্য যেসব দেশে শ্রমবাজার উন্মুক্ত হয়েছে, সেসব দেশের ব্যাপারে তদারকি নেই। তাই নিচের দিকে যাচ্ছি।

বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, ট্রেডিশনাল মার্কেটের ওপর ভিত্তি করে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। সৌদি আরবের ওপর নির্ভরশীর প্রায় ৮০ শতাংশ বিদেশি শ্রমবাজার। ইউরোপেও একটা মার্কেট আছে। কিন্তু এসব যায়গায় ঢুকতে গেলে যে ধরনের দক্ষ কর্মী লাগবে, তা আমরা তৈরি করতে পারি নাই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশে কর্মসংস্থান তৈরিতে গবেষণা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না। প্রকল্পভিত্তিক যেসব কাজ হচ্ছে, তা প্রতিষ্ঠানিকীকরণ করা দরকার বলেও মনে করেন তারা।

অভিবাসন বিশ্লেষক আসিফ মুনীর বলেন, নতুন জব মার্কেট খোঁজার ক্ষেত্রে হোক অথবা নতুন কারিগরি দক্ষতার ক্ষেত্রে হোক— প্রকল্পভিত্তিক কিছু উদ্যোগ আসে; কিন্তু সরকারিভাবে সেটা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা হয় না।

শহীদুল আলম আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বাইরেও অনেকে দেশে কাজের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রবাসী কর্মীদের আগ্রহ মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে সৌদি আরব। ধর্মীয় আবেগের কারণেই সৌদিতে কর্মী যাওয়ার প্রবণতা বেশি।
এছাড়া, মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে শ্রমবাজার সম্প্রসারণে সরকার কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম। এ জন্য দক্ষতা উন্নয়নে জোর দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply