যে ‘ইচ্ছাকৃত ভুল’ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ফুটবলের ইতিহাসে

|

ইচ্ছাকৃতভাবে বল গোল পোস্টের বাইরে কিক করার দৃশ্য।

ফুটবল মানেই অবিশ্বাস্য ঘটনা। ফুটবল মানেই ঐক্যতার প্রতীক। ফুটবল মাঠে প্রতিদিনই ঘটে কত রোমাঞ্চকর ঘটনা। তবে এর মধ্যে কোনোটি স্থান করে নেয় ইতিহাসের পাতায়, ফুটবল প্রেমীদের কাছে যা হয়ে ওঠে চিরস্মরণীয়। ২০০৩ সালে অলিম্পিক গেমসে ঘটে এমনই এক অভূতপূর্ব ঘটনা। জেতার মোক্ষম সুযোগটি ইচ্ছাকৃতাবেই ছেড়ে দেয়ার সেই দৃষ্টান্ত অমর হয়ে থাকবে চিরকাল।

মূলত, ২০০৩ সালে অলিম্পিক গেমসে ডেনমার্কের মুখোমুখি হয়েছিল ইরান। খেলা চলার সময় ম্যাচের প্রথমার্ধে বাঁশি শুনে বল হাতে তুলে নেন ইরানের একজন ডিফেন্ডার। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। কারণ সেই বাঁশিটি রেফারি নয়, বাজিয়েছিলেন গ্যালারিতে থাকা এক দর্শক। তবে নিয়ম তো নিয়মই। ডিবক্সের ভেতরে এ ঘটনা ঘটায় প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক পেয়ে যায় পেনাল্টি। ইরানীরা প্রতিবাদ করলেও নিয়ম অনুযায়ী ডিবক্সের ভেতরে হ্যান্ডবল করায় পেনাল্টি পায় ডাচরা।

এমন সময় কোচ মর্টেনন ওস্লেনের এর সাথে পরামর্শ করতে আসেন ডেনমার্কের প্লেয়ার মর্টেন উইগহর্স্ট। এরপর পেনাল্টি কিক করতে আসেন তিনি। নিঃশ্বাস বন্ধ করে গ্যালারির সমস্ত দর্শকের চোখ তখন উইগহর্স্টের পায়ের দিকে। তবে সকলকে এসময় রীতিমতো চমকে দেন এই ফুটবলার। ইচ্ছাকৃতভাবেই বলে কিক দিয়ে গোল পোস্টের বাইরে পাঠিয়ে দেন তিনি। এ সময় গোলকিপারও হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান তাকে। বসে ছিলেন না ইরানী দর্শকরাও। ইচ্ছাকৃতভাবে এ সুযোগ মিস করায় গ্যালারির প্রত্যেক ইরানী সমর্থক এ সময় আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে সম্মান জানান উইগহর্স্টকে।

সেই ম্যাচে ইরানের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় ডেনমার্ক। কিন্তু হেরে গেলেও ইরানসহ সারা পৃথিবীর মানুষের হৃদয় জিতে নেয় ড্যানিশরা। ইচ্ছাকৃতভাবে পেনাল্টি মিস করার জন্য তাকে ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড দিয়ে ভূষিত করে অলিম্পিক কমিটি। উইগহর্স্টও আরেকবার প্রমাণ করেন, ফুটবল ঘৃণা ছড়ায় না, ছড়ায় ভালোবাসা।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply