চীনে কোভিড বিধি বিরোধী বিক্ষোভ; শি জিনপিং কি চাপে পড়েছেন?

|

ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ছবি।

কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে গণরোষ বেড়েই চলেছে চীনে। চলমান নজিরবিহীন বিক্ষোভে সরকারবিরোধী আওয়াজও তুলছেন অনেকে। কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত চীনে যা একেবারেই বিরল। ব্যাপক ধরপাকড়, কড়াকড়ির পরও থেমে নেই বিক্ষোভ; বরং ছড়াচ্ছে নতুন নতুন শহরে। দেশটিতে হঠাৎ এ আন্দোলন প্রশ্নের মুখে ফেলছে ক্ষমতাসীনদের প্রভাবকে। এ পরিস্থিতিকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্য বড় পরীক্ষা বলে মনে করছেন পশ্চিমা অনেক বিশ্লেষক।

বিক্ষোভ বা সরকারবিরোধী স্লোগান বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু চীনের মতো দেশে, এমন আন্দোলন বিরল ঘটনাই বটে। সম্প্রতি, সরকারের জিরো কোভিড নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে চীনের রাজধানী বেইজিং কিংবা সাংহাইয়ের মতো প্রধান শহরগুলোতেও।

করোনা মহামারি শুরুর প্রায় তিন বছর পর, বিভিন্ন দেশে যখন শিথিল হচ্ছে কড়াকড়ি, তখনও জিরো কোভিড নীতিতে আটকে আছে চীন। বিধিনিষেধের বেড়াজালে বিরক্ত, ক্ষুব্ধ জনগণ। যে ক্ষোভের বহিপ্রকাশ ঘটছে রাজপথে।

করোনা নীতি নিয়ে বিক্ষোভের সূত্রপাত হলেও বিক্ষোভ মিছিলগুলো থেকে আওয়াজ উঠছে- চিরস্থায়ী শাসক চাই না। সম্রাটের শাসন চাই না। সরাসরি শাসকদের নিয়ে প্রশ্ন তোলা একেবারেই নজিরবিহীন চীনে। বিষয়টিকে, মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা শি জিনপিংয়ের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক ররি ট্রুক্স বলেন, জিরো কোভিড নীতি বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আরও অনেক হতাশা বেরিয়ে আসছে। রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে চীনের সাধারণ মানুষ। বিপজ্জনক জেনেও রাজপথে নামছে তারা। নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়নে যথেষ্ট ক্ষমতা আছে শি’র। তবে ব্যক্তিগতভাবে শি জিনপিংয়ের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে এ আন্দোলন।

দাপুটে প্রশাসনের সেন্সরশিপ উপেক্ষা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হতাশা প্রকাশ করছেন চীনারা। তবে, এক্ষেত্রে নমনীয় হওয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই প্রশাসনের তরফ থেকে। সমানে চলছে ধরপাকড়। আর প্রশাসন বলছে, ভুল তথ্য ছড়িয়ে উস্কানি দেয়া হচ্ছে এ আন্দোলনে।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝাও লিজিয়ান বলেন, চীন বাস্তবতার আলোকেই জিরো কোভিড নীতি অনুসরণ করছে। মহামারি প্রোটোকলের নবম ধাপ অনুসরণ করছে। এখন ২০ ধরণের বিধিনিষেধ আছে। কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব আর জনগণের সহায়তায় কেভিড নাইনটিনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই সফল হবে।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাস ধরে নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেখছে মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল দেশ ইরান। কঠোরহাতে দমন করলেও, সংস্কারের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছে তেহরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন পর রাস্তায় নামা চীনারাও, নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে বেইজিংকে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply