খেরসনে দ্বিতীয় দিনের হামলায় নিহত ১০, আহত অর্ধশতাধিক

|

দ্য টেলিগ্রাফ থেকে সংগৃহীত ছবি।

একদিকে তীব্র ঠাণ্ডা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকটে বিপর্যস্ত নাগরিক জীবন; অন্যদিকে টানা বিমান হামলার ভয়াবহতা। প্রিয়জনদের হারিয়ে শোকাহত-ক্ষুব্ধ ইউক্রেনীয়রা। ইউক্রেনের খেরসনে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। জানা গেছে, সমগ্র খেরসনে ৫৪ দফা গোলাবর্ষণে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১০ জনের। আহত অর্ধশতাধিক। বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানকার একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গ্যাস পাইপলাইন। আবাসিক এলাকায় হামলা হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেসামরিক বসতবাড়ি-স্কুলভবন। ওডেসা, লভিভসহ আরও কিছু অঞ্চলেও ছোঁড়া হয় ক্ষেপণাস্ত্র। তীব্র শীতে রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎহীন ৬০ লাখ মানুষ। খবর আলজাজিরার।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, পুনরুদ্ধার হওয়া খেরসনের পথে পথে এখন মিলছে মরদেহ। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চালানো ব্যাপক হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানকার অসংখ্য আবাসিক ভবন, স্কুল, গ্যাস পাইপলাইন, বিদ্যুৎকেন্দ্র।

স্বজন হারানো এক ইউক্রেনীয় আলজাজিরাকে বলেন, রুশদের ঘৃণা করি। ওরা আমার বাবা-মাকে মেরে ফেলেছে। এখন নিজের সন্তানের জন্য বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি। জানি না আমাদের ভবিষ্যত কী।

খেরসনের গভর্নর জানিয়েছেন, হামলার াশঙ্কায় হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে রোগীদের। ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে দক্ষিণে ওডেসা, পশ্চিমে লভিভসহ আরও কিছু অঞ্চলে। রুশ বাহিনীর প্রধান টার্গেট এখনও ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, তীব্র শীতেও রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় এ মুহূর্তে বিদ্যুৎহীন ৬০ লাখ মানুষ।

নতুন করে রুশ হামলা প্রসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, বিধ্বস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সচল করাই এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায়ও ১ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন ছিলেন। রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের কিছু জায়গা টানা ২০-৩০ ঘণ্টা অন্ধকারে ছিলেন। ওডেসা, লভিভ, ভিনিৎসিয়া, নিপ্রো-পেত্রোভস্ক অঞ্চলেও সংকট আছে। সবমিলিয়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬ কোটির বেশি মানুষ।

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেয়া সেনাদের মায়েদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ সময় তিনি নিহত সেনাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। যুদ্ধে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জীবনের লক্ষ্য অর্জন করছে রুশ সেনারা- এমন মন্তব্য করেন পুতিন।

রুশ প্রেসিদেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, সন্তান হারানোর শোকের কোনো সমবেদনা হয় না। তবে আমরা সত্যিই এ বেদনার সমব্যথী। মৃত্যুকে কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না। প্রশ্নটি হলো আমরা কীভাবে বেঁচে আছি। অগোচরেই মৃত্যু হয় অনেকের। আর অনেকের বেঁচে থাকা সার্থক হয়। আপনাদের ছেলের জীবনের সত্যিকারের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী- ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ১ লাখ রুশ ও ১ লাখ ইউক্রেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে।

উল্লেখ্য, তীব্র শীতে যখন ভয়াবহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট চলছে ইউক্রেনে, তখনই চালানো হলো ভয়াবহ এ হামলা। সম্প্রতি খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে রাশিয়া। এরপরই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নেয় ইউক্রেনীয় সেনারা। তারপর থেকেই খেরসনে আক্রমণের পরিধি বাড়িয়েছে রুশ সেনাবাহিনী।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply