চট্টগ্রামে ভিন্নধর্মী আয়নাবাজি! এনআইডি হারিয়ে এখন ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি

|

মাদক মামলায় অভিযুক্ত একজন কিন্তু ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন নিরপরাধ আরেকজন। এ যেনো আরেক আয়নাবাজি! এক রোহিঙ্গা নিজ পরিচয় গোপন করে অন্যের নাম, ঠিকানা ও পরিচয়পত্র ব্যবহার করায় এ ঘটনার উদ্ভব। চট্টগ্রাম আদালতে চাঞ্চল্যকর এ জালিয়াতি ফাঁসের পর বিস্মিত সবাই।

২০১৭ সালের আগস্টে জোহর আলম নামে এক রোহিঙ্গাকে মারধরের সময় মানিব্যাগ হারান টেকনাফের বাসিন্দা নুরুল বশর। সেখানে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র হাতিয়ে নেন ওই রোহিঙ্গা। কিছুদিন পর ২০০০ পিস ইয়াবাসহ ওই রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ধরা পড়েন। আগের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে কৌশলে নিজেকে নুরুল বশর বলে পরিচয় দেন রোহিঙ্গা জোহর আলম। প্রমাণস্বরূপ পুলিশকে দেখান বশরের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া পরিচয়পত্র।

ওই মামলায় জেল খেটে ২০২০ সালে বেরুনোর পর দুই বছর পালিয়ে ছিলেন জোহর আলম। গেলো জানুয়ারিতে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। যেহেতু তিনি বশরের পরিচয়পত্র ব্যবহার করেছেন, বিনা অপরাধে ১০ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নুরুল বশর।

অবশ্য, চট্টগ্রামে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচার কার্যক্রমের এক পর্যায়ে ধরা পড়ে চাঞ্চল্যকর এ জালিয়াতি। তাতে বিস্মিত হন সবাই।

নুরুল বশরের আইনজীবী সেলিম উল্লাহ চৌধুরী বলেন, জোহর আলম রোহিঙ্গা, তা গোপন করে আমার মক্কেলের ঠিকানা ব্যবহার করে।

এদিকে, ২০২০ সালে জামিনে মুক্তির পর জালিয়াতি স্বীকার করে জোহর আলমের দেয়া বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ এসেছে যমুনা টেলিভিশনের কাছে। তাতে জোহর আলম বলেন, আমি হিসেব করেছি, যদি আমাকে কেউ জামিন করায় তাহলে জামিন হবে। আর সাজা হলে তা ভোগ করে মামলা খারিজ করব।

সবশেষ গত ৬ আগস্ট টেকনাফ থানার পৃথক অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন জোহর আলম। তবে, মাদক মামলায় এখনও পলাতক।

এ ধরনের ঘটনার জন্য মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিকে দুষছেন রাষ্ট্রপক্ষ ও অপরাধ বিশ্লেষকরা। চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি আইয়ুব খান বলেন, যার দায়িত্বহীনতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে; তা যদি প্রমাণিত হয় আদালত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারেন।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply