মুক্তিপণের টাকা দিয়েও মিলেনি নিখোঁজ ছেলে

|

ফরিদপুর প্রতিনিধি

মুক্তিপণের টাকা দিয়েও মিলেনি ছেলে। তাই ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি, যে কোন ভাবেই হোক যে কিছুর বিনিময়েই হোক ছেলেকে ফিরিয়ে দিন। ছেলেকে ফিরে পেতে এই আকুতি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের পাগলপাড়া গ্রামের গ্রীস প্রবাসী আবুল হোসেন মাতুব্বর এর স্ত্রী জান্নাতী বেগমের।

পুলিশ, র‌্যাব, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি সবার কাছেই গিয়েছেন জান্নাতী, কিন্তু দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, স্বরাস্ট্র মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী’র দৃষ্টি আকর্ষণ ও সহায়তা কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেন জান্নাতী বেগম। শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

জান্নাতী বেগমের বক্তব্য অনুযায়ী, গত ৮ জুন তারাবি নামায পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় তার বড় ছেলে অন্তর (১৪)। অন্তর তালমা নাজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র।

খুঁজে কোথাও না পেয়ে ওই দিন রাতেই নগরকান্দা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন অন্তরের মা। এর পরদিন ৯ জুন রাত ২ টার দিকে অপহরণকারী পরিচয় দিয়ে অন্তরের মায়ের মোবাইলে ফোন দিয়ে ছেলেকে ফিরে পেতে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

অপহরণকারীদের সাথে দর কষাকষি ও পুলিশের সাথে পরামর্শ করে অপহরণকারীদের জানানো জায়গাতে রেখে আসা হয় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। সে সময় অদূরেই অবস্থান নিয়েছিল নগরকান্দা থানা পুলিশের একটি টিম। কিন্তু অন্তরের জীবনের ঝুঁকি বিবেচনা করে অপহরণকারীদের আটক করে নি পুলিশ।

টাকা পেয়ে অন্তরের মায়ের মোবাইলে একটি এসএমএস দেয় অপহরণকারীরা। এসএমএসে ওই গ্রামের যুবক খোকনের নাম উল্লেখ করে তার সাথে যোগাযোগ করলে ছেলেকে পাওয়া যাবে সেটা জানানো হয়। এরপর থেকেই মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয় অপহরণকারীরা।

এরপরও ছেলের কোন সন্ধান না পেয়ে গত ১৫ জুন নগরকান্দা থানায় একটি অপহরণ মামলা করে অন্তরের পরিবার। একই সাথে ওই এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে যায় পরিবারটি। সকলেই আশ্বাস দেয় ছেলেকে ফিরে পেতে সহায়তা করার। কিন্তু আজ পর্যন্ত ছেলের কোন সন্ধান না পেয়ে  গণমাধ্যমের সহায়তা চান এই মা।

এই মায়ের দাবী, টাকা গেছে যাক, তিনি কাউকে জেলেও দিতে চান না, কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে চান না, শুধুমাত্র সুস্থ ভাবে ফিরে পেতে চান নিজের ছেলেকে।

এই বিষয়ে নগরকান্দা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এএফএম মহিউদ্দিন জানান, এই মামলায় ৩ জনকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর র‌্যাব কাম্পের অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইছ উদ্দিন জানান, তদন্ত সংস্থা নগরকান্দা থানা পুলিশের সাথে সমন্বয় করে এই মামলায় কাজ করছে র‌্যাব। কিছু দিনোর মধ্যে হয়ত ফলাফল জানাতে পারবো, তবে এখনই তদন্তের স্বার্থে এর বেশী কিছু জানানো যাচ্ছে না।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply