বলিউডের শীর্ষ তিন লেডি সুপারস্টার

|

মুমতাজ, হেমা মালিনি ও মাধুরী দীক্ষিত।

বলিউডে গত পনেরো বছরে একজন প্রকৃত পুরুষ বক্স অফিস তারকা তৈরি হয়নি। সেখানে লেডি সুপারস্টার তো অনেক পরের বিষয়। সত্যিকারের সুপারস্টারের নাম উঠলে তিন খানের বাইরে আর কাউকে কল্পনাই করা যায় না। অন্যদিকে, এ যুগের কোনো নারী তারকা এখনও সেই স্তরে পৌঁছাতে পারেনি। তবে এর আগে বলিউডের স্বর্ণযুগে ছিল লেডি সুপারস্টারদের দাপট।

হিন্দি সিনেমার প্রথম লেডি সুপারস্টার; মুমতাজ। যিনি সত্যিকার অর্থেই বক্স অফিসে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। সুপারস্টার রাজেশ খান্নার সাথে একাধিক ব্লকবাস্টার সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। এছাড়া সঞ্জীব কুমার, সঞ্জয় খান এবং ফিরোজ খান এর মতো অভিনেতারা ভালো অভিনয় করতে না পারলেও মুমতাজের জনপ্রিয়তার কারণেই হিট পান।

অনেক নবাগতরাই তখন মুমতাজের সাথে জুটি বেঁধেছিলেন; কারণ পরিবেশকরা তার নামের ওপরই সিনেমায় বিনিয়োগ করতেন। এ নবাগতদের একজন ছিলেন সে সময়ের ভবিষ্যত সুপারস্টার অমিতাভ। মুমতাজের কারনে অমিতাভ বচ্চনের ‘বন্দে হাত’ সিনেমাটি ‘জাঞ্জির’এরচেয়েও বেশি হিট হয়েছিল।

বলিউডের প্রথম লেডি সুপারস্টার মুমতাজ।

বলিউডে মুমতাজ পর্ব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, কারণ হঠাৎই ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আর এ সুযোগটাই কাজে লাগান অভিনেত্রী হেমা মালিনী। মুমতাজেরই ছেড়ে দেয়া ‘সীতা অর গীতা’সহ অনেক সিনেমায়ই তিনি অভিনয় করেন হেমা। হেমা মালিনী সে সময় সম্ভবত সর্বকালের সবচেয়ে বড় নারী তারকা হয়ে ওঠেন। হেমা মালিনীর ব্লকবাস্টার সিনেমাগুলো সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সুপারস্টার ধর্মেন্দ্রের সাথে আসে। এরমধ্যে রয়েছে ‘শোলে’ এবং ১৫টি অন্যান্য সিনেমা; যেগুলোর বক্স অফিস আয় আজকের হিসেবে ২০০ কোটির বেশি। আশির দশকের পুরো সময়ই তার ব্লকবাস্টার সিনেমা অব্যাহত ছিল।

বেশ কয়েক প্রজন্মের ড্রিমগার্ল ছিলেন হেমা মালিনী।

১৯৮৩ সালে ‘হিম্মতওয়ালা’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে তারকা হয়ে ওঠেন শ্রীদেবী। সে সময় নারী তারকাদের শীর্ষস্থানে যে শূন্যতা ছিলো তা অল্প সময়ের মধ্যেই দখল করেন তিনি। মুমতাজের মত শ্রীদেবীও ‘নাগিনা’, ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ এবং ‘চাঁদনী’র মতো সিনেমায় অনেক নায়ককে ব্যবসায়িক সাদল্যের স্বাদ দিয়েছিলেন। বিশেষ করে ‘নাগিনা’ ছিল সেসময়ের বলিউড ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্লকবাস্টার সিনেমা।

মাধুরী দীক্ষিত হলেন বলিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির শেষ নারী বক্স অফিস তারকা। ‘তেজাব’ সিনেমা তাকে সুপারস্টার তকমা এনে দেয়। সে সময় ইন্ডাস্ট্রিতে শ্রীদেবীর একক রাজত্ব ছিল। তার সাথে বক্সঅফিসে মুখোমুখি সংঘর্ষে ‘দিল’, ‘সাজন’ এবং ‘বেতার’-এর মতো সিনেমা মাধুরী দীক্ষিতকে তারকায় পরিণত করে।

নায়িকাদের জনপ্রিয়তাকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন মাধুরী দীক্ষিত।

সে সময় সিনেমায় যেকোনো বড় নায়কের বিপরীতে মাধুরীই বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া শুরু করেন। নব্বই দশকের শেষ পর্যন্ত নিজের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখেন মাধুরী। বলিউডে অন্য কোনো নায়িকা কখনও এ স্তরে পৌঁছেননি।

সমসাময়িকদের নায়িকাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় লেডি সুপারস্টার ধরা হয় আলিয়া ভাটকে।

মাধুরী দীক্ষিতের পর বলিউডে বেশ কয়েকজন নারী তারকা জন্ম নেন। এই তালিকায় রয়েছেন কাজল, কারিশমা, ঐশ্বরিয়া, রানী মুখার্জি, প্রীতি জিনতা, কারিনা, ক্যাটরিনা এবং দীপিকা পাড়ুকোন। কিন্তু এই তারকাদের কেউই সেই অর্থে লেডি সুপারস্টার হয়ে উঠতে পারেননি। বলিউডের লেডি সুপারস্টার হওয়ার দৌড়ে এই মুহূর্তে রয়েছেন আলিয়া ভাট, যিনি তার প্রজন্মের নায়কদের চ্যালেঞ্জ করার সক্ষমতা রাখেন। শেষ পর্যন্ত স্বর্ণযুগের লেডি সুপারস্টারের সাথে আলিয়া ভাটের নাম উচ্চারিত হবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে।

এদের মধ্যে কেউ কী পারবেন নিজের নামের পাশে ‘লেডি সুপারস্টার’ এর তকমা বসাতে?

/এসএইচ        


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply