করোনার দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা

|

ছবি: সংগৃহীত।

করোনাকাল কাটিয়ে মানুষ এখন অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে সাধারণ মানুষের মনে এর ফলে বড়সড় প্রভাব পড়েছে। মেডিকেল জার্নাল দ্য বিএমজে’র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার দীর্ঘ মেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আত্মহত্যা প্রবণতা বাড়ছে। মার্কিন গবেষকরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ১৫ কোটি মানুষ কোভিডের দীর্ঘ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে। যা পরে তাদের আত্মহননের মতো করুণ পরিণতির দিকে ধাবিত করছে।

গত মে মাসে সাবেক মার্কিন টেলিভিশন স্ক্রিপ্ট রাইটার হেদি ফেরে আত্মহত্যা করেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। এ নিয়ে হেদি ফেরের স্বামী নিক গুথে বলেন, করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর আমার স্ত্রী বিষন্নতায় ভুগছিল। নানা রকম শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় তার মধ্যে। তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারছিল না সে। তিন সপ্তাহ ধরে আমার স্ত্রী রাতে এক ঘণ্টাও ঘুমাতে পারতো না। মানসিকভাবেও ভীষণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত মে মাসের ২২ তারিখ আমি যখন বাসায় ছিলাম না, তখন আত্মহত্যা করে সে।

গবেষণায় দেখা গেছে, হেদি ফেরেরের মতো বিশ্বব্যাপী আরও লাখো মানুষ করোনা পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক জটিলতায় ভুগছে। যা ধীরে ধীরে তাদেরকে আত্মহত্যা প্রবণ করে তুলেছে। ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড ইভালুয়েশন বলছে, মহামারির দুই বছরে বিশ্বব্যাপী ১৫ কোটি মানুষের মধ্যে কোভিডের দীর্ঘ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ক্লান্তি, মনোযোগ কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, শরীরে তীব্র ব্যাথা হওয়া। তাদের মধ্যে ২১ শতাংশ ট্রমাটিক ব্রেণ ইঞ্জুরির মতো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

যুক্তরাজ্য ও স্পেনের গবেষকরা বলছেন, সাধারণ রোগীদের তুলনায় দীর্ঘ ক্লান্তিজনিত সমস্যায় ভোগা রোগীরা আগের তুলনায় ছয় গুণ বেশি আত্মহত্যা প্রবণ হয়ে উঠেছেন। এমন পরিস্থিতিতে করোনা পরবর্তী শারীরিক ও মানসিক জটিলতা নিয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply