মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কর্মীদের মারধরে মুমূর্ষু আ. লীগ নেতা জসিম

|

আহত আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন (বাঁয়ে)

মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় নিজ দলের নেতাকর্মীদের হাতে ব্যাপক মারধরে এখন হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রাজধানীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন। তাকে মারধরের অভিযোগ একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী এনামুল হকসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। তবে কাউন্সিলরের দাবি, তিনি মারধরে অংশ নেননি। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটে ১৬ আগস্ট রাতে। রাজধানীর শান্তিনগরের হোটেল হোয়াইট হাউজে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের সাথে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হচ্ছে। ফুটেজে কাউন্সিলর এনামুল হক আবুল, ছাত্রলীগ নেতা মিরনসহ দেখা যাচ্ছে আরও বেশ কয়েকজনকে। হোয়াইট হাউজ থেকে বের হবার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে জসিম উদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান স্বজনরা।

ঘটনার শুরু ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে। জসিম উদ্দিনের মেয়ে শান্তিরগর এলাকার বাসিন্দা সিবা আক্তার যুথিকে নিয়ে। এই মারধরে অংশ নেয়ারাই ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করেছিলেন। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন যুথির বাবা। এতে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক আবুল ও তার সহযোগীরা তাকে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করেছেন বলে তরুণীর অভিযোগ। জসিম উদ্দিনের মেয়ে পল্টন থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিবা আক্তার যুথি বলেন, আব্বু উনার কাছে অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিল যে, আপনারা কেন এটা করছেন। কিন্তু তার সাথে যে বাহিনী ছিল, যারা সাথে ছিল তারা বাবাকে আটকে রেখে মারধোর করেছে। বুকে ঘুষি বা কোনোভাবে প্রেসার দেয়া হয়েছে। এরপর তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছে। এখনও বাবা সিসিইউতেই আছে। ডাক্তাররা এখনও আমাদের কোনো আশা দিতে পারছে না।

সিবা আক্তার যুথি।

মামলার বাদী সিবা আক্তার যুথি বলেন, তাকে পল্টন থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কাউন্সিলরের অনুসারীরা ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য লিখে পোস্ট করেছিলেন। তার বাবা এর প্রতিবাদ করলে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে বেদম মারধর করা হয়। সিবা আক্তার যুথি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন, তিনি যেন বিষয়টিতে দৃষ্টি দেন। আমার বাবা এখন মৃত্যশয্যায়। আমরা যেন এই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার পাই। আমরা সরকার দলীয় বলেই বেশি খারাপ লাগছে। সরকার দলীয় হওয়ার পরেও আমাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।

তবে, মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর এনামুল হক আবুল। তার দাবি, জসিমকে ফোন করে হোটেলে আসতে বলা হয়নি। তিনি নিজে থেকেই রাতে হোটেলে আসেন; ছাত্রলীগ নেতা মিরনের সাথে হাতাহাতিতে জড়ান। যমুনা নিউজের সাথে টেলিফোনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক আবুল বলেন, হোয়াইট হাউজ হোটেলে টেবিলের ওপর রাখা ফুলদানি দিয়ে মিরনকে মারতে যায় জসিম উদ্দিন। দুজনের মধ্যেই ধস্তাধস্তি হচ্ছিল। আমি অনেক কষ্টে তাদের বিচ্ছিন্ন করে বসালাম।

এদিকে, পল্টন থানার ওসি জানান, ঐ রাতে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন: পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, রাজধানীতে খেলনা পিস্তলসহ গ্রেফতার প্রতারক

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply