সিরিজ বোমা হামলা: ১৭ বছর পরও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৪১ মামলা

|

সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর অতিক্রান্ত।

১৭ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা। মামলার কার্যক্রমও চলছে ঢিমেতালে। এখনো ঝুলছে ৪১টি মামলা। এসব মামলার আসামিদের মধ্যে ছয়জনের অন্য মামলায় ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। তবে, সাক্ষীর অভাবে মামলাগুলোর কার্যক্রম এগুচ্ছে না বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিকভাবে প্রতিরোধ না হলে জঙ্গিবাদের মূলোৎপাটন সম্ভব নয়।

বছর ঘুরে সামনে আসে ১৭ আগস্ট। মনে করিয়ে দেয় এক ভয়াবহ দিনের; যেদিন একযোগে দেশের ৬৩টি জেলায় বোমা হামলা চালিয়েছিল উগ্রবাদী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)।

নারকীয় ওই ঘটনার পর সারাদেশে মোট ১৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়। যার মধ্যে এখনো চলমান ৪০টি মামলা। বাকিগুলোর মধ্যে ১০২টি মামলায় ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়েছে ১৫ জনকে, যার মধ্যে ছয়জনের ভিন্ন মামলায় ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। এদের সবাই জেএমবি সদস্য। এছাড়া আরও অন্তত সাড়ে তিনশো জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। সাক্ষী নেই বলে ১৭টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত সংস্থা।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, স্পর্শকাতর এই মামলাগুলোর অধিকাংশের ক্ষেত্রেই সাক্ষী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বিচারকাজে বিলম্ব হচ্ছে। ঢাকা মহানগর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, মামলায় সাক্ষী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে মামলা শেষ করা হচ্ছে না। আর সাক্ষী হাজির করা না গেলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে যে, সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে না।

ওই ঘটনার পর উগ্রবাদের সক্রিয় উপস্থিতি টের পায় বাংলাদেশ। হলি আর্টিজানের বর্বর হামলার ক্ষত এখনও বর্তমান। দেশব্যাপী টানা অভিযানে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় করা গেছে উগ্রবাদী সংগঠনগুলো কার্যক্রম। অভিযানের পাশাপাশি উগ্রবাদীদের আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করা সবচেয়ে বেশি জরুরি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, অর্থ আর রাজনৈতিক আশ্রয় বন্ধ না হলে এসব সংগঠনের কার্যক্রমও বন্ধ করা কঠিন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশিদ বলেন, জঙ্গিবাদ বেড়ে ওঠার মূল অক্সিজেন হচ্ছে অর্থ। সেই অর্থ যখন তারা পাবে, কেউ তাদের রাজনৈতিক সুরক্ষা দেবে তখন জঙ্গিবাদের আবার বিস্তার লাভের সম্ভাবনা থাকবে। সহিংসতা হচ্ছে জঙ্গিবাদের আদর্শ। সেই আদর্শ মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে থাকে। সফট পাওয়ার যেমন, সামাজিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগকে ব্যবহার করতে হবে যাতে জঙ্গিরা সমাজে জায়গা না পায়।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply