সাতচল্লিশে যাদের বিচ্ছেদ, আলি তাদের একজন

|

সাতচল্লিশে যাদের বিচ্ছেদ, আলি হাসান তাদের একজন।

দেশভাগ শুধু ভারতীয় উপমহাদেশকে খণ্ডিত করেনি, বিচ্ছিন্ন করেছে হাজারো স্বজনকে। এই যেমন করাচির আলি হাসান। এক বছর বয়সে দিল্লি থেকে দাদা-দাদির সাথে করাচি যান তিনি। তবে পরিবারের বাকি সদস্যরা থেকে যান ভারতে। এরপর থেকে পরিবার বিচ্ছিন্ন হওয়ার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন ৭৬ বছর বয়সী আলি।

সাতচল্লিশে দাদা দাদির সাথে করাচি যাওয়ার পর থেকেই বাবা-মা-ভাই-বোনের সাথে বিচ্ছেদ তার। সবশেষ ২০১৪ সালে দিল্লি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন আলি হাসান। এরপর মা আর দুই বোন মারা গেলেও শেষ দেখাটা হয়নি। একজন ভাই আছেন আলির, তারও সাথে সাক্ষাত নেই আট বছর।

আলি হাসান।

আলি হাসান বলেন, ভিডিও কলে ভাইয়ের সাথে কথা হলেও তাকে তো বুকে জড়িয়ে ধরতে পারি না। তাকে স্পর্শ করতে পারি না। নিজের জন্মভূমি দেখি না কত বছর। এই কষ্ট কি ঘোচানো সম্ভব?

জন্মভূমিকে শেষবারের মতো দেখার স্বপ্ন বুকে নিয়ে অন্তিম দিনের জন্য অপেক্ষা আলির। বলেন, নিজের পরিবার আত্মীয়-স্বজন সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন। আমি চাই নাতিদের নিয়ে শেষবারের মতো নিজের জন্মস্থান থেকে ঘুরে আসতে।

ওদিকে দিল্লিতে সীমান্তের অপর পাশে থাকা সৈয়দ আবিদও জানেন না ভাই আলি হাসানের সাথে আর দেখা হবে কিনা। তারও অপেক্ষা আর একটিবার ভাইকে বুকে জড়িয়ে ধরার। তিনি বলেন, আমাদের মতো এমন হাজারও পরিবার আছে যারা দেশভাগের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এটা যে কী যন্ত্রণা, শুধু যার হয় সেই বোঝে। এই কষ্ট কোনোভাবে লাঘব করা সম্ভব না।

দেশভাগের মাধ্যমে, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র তৈরি হয়েছে। তবে যে ২ কোটি মানুষকে জন্মস্থান আর পরিবার থেকে আলাদা করেছে র‍্যাডক্লিফ লাইন, তাদের হাহাকারের শেষ নেই।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply