ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি দিতে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাজের খোলা চিঠি

|

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশকিছু চলচ্চিত্র উৎসবে দারুণ প্রশংসিত মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’। অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কারও থাকা সত্ত্বেও নির্মাণের সাড়ে তিন বছরেও সিনেমাটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিতে পারছেন না তিনি। ২০১৯ সালে ‘শনিবার বিকেল’ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে জমা দেয়ার পর ‘অজানা’ কারণে সিনেমাটি ব্যান করা হয়। আর এ নিয়ে সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ‘ডুব’খ্যাত এ নির্মাতা।

এদিকে, সিনেমাটি মুক্তির জন্য তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলো চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া। তাদের অফিসিয়াল ফেসবুকে এক খোলা চিঠি প্রকাশ করে সিনেমাটি দেশের দর্শকদের দেখার সুযোগ করে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

খোলা চিঠিতে বলা হয়-

মাননীয় তথ্যমন্ত্রী মহোদয়,

প্রথমে সালাম ও ধন্যবাদ গ্রহণ করবেন। ধন্যবাদ কারণ ইতিপূর্বে আপনার কাছে আবেদন করেছিলাম ‘গলুই’ সিনেমাটি জামালপুরের অডিটোরিয়ামে প্রদর্শন চালু করার জন্য। এবং আপনার অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কারণে তা আবার অডিটোরিয়ামে প্রদর্শন চালু হয়।

আবার আপনার দ্বারস্থ হতে হলো, কারণ আপনি চলচ্চিত্রের সর্বোপরী অভিভাবক এবং আপনি একজন সিনেমাপ্রেমী ।

আমরা বিশ্বাস করি, চলচ্চিত্র আমাদের সংস্কৃতির এমন এক অংশ, যেখানে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সকল ধর্মের মানুষ সিনেমা হলে পাশাপশি বসে সিনেমা দেখে। সিনেমা হলে উঁচু নিচু জাত ধর্ম থাকে না । থাকে একটাই অনুভূতি, আর তা হলো আমরা বাঙালী এবং বাংলা সিনেমা দেখি ও ভালবাসি।

জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত এবং মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি দীর্ঘদিন যাবত সেন্সরে আটকে আছে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড কেনো সিনেমাটি আটকে রেখেছে, তা এখনও অফিসিয়ালি আমাদের জানায় নাই।

আপনি হয়তো জানেন, শনিবার বিকেল সিনেমাটি এক শটে নির্মিত একটি সিনেমা যা বিশ্বেই এর আগে হয়েছে হাতে গোনা। এছাড়া ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভালে রাশিয়ান ক্রিটিক ফেডারেশনের বিচারে বেস্ট ফিল্ম হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন দেশের ফেস্টিভাল থেকে পুরস্কৃত হয়েছে ।

জাজ মাল্টিমিডিয়া এ পর্যন্ত ৪১টি সিনেমা তৈরি করেছে এবং মুক্তি দিয়েছে। আমাদের কোনো সিনেমায় দেশ বা ধর্ম বিরোধী কোনো বক্তব্য বা সংলাপ থাকে না। এই ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন ।

আমারা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটিতে দেশ বিরোধী বা ধর্ম বিরোধী কোন কিছু নেই । বরং এই সিনেমাটিতে আমাদের ধর্ম ও আমাদের দেশের সাংস্কৃতিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ করতে চাই যে, বিশ্বখ্যাত পত্রিকা দ্য হলিউড রিপোর্টার ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি দেখে লিখেছে- এই সিনেমাটি বাংলাদেশে ব্যান করা হয়েছে, বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কায়, কিন্তু ছবিটি দেখে আমাদের উপলব্ধি হলো যে সিনেমাটি বাংলাদেশের ইমেজ বৃদ্ধি করবে, কমাবে না।

আমরা আপনাকে এই সিনেমাটি দেখার অনুরোধ করছি । আপনি দেখলে এই সিনেমাটি অনায়েসে সেন্সর সার্টিফিকেট পেয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

চলচ্চিত্রের এই ক্রান্তি লগ্নে, সুবাতাস বইতে শুরু করেছে । সেই ধারাকে অব্যাহত রাখতে, সিনেমা হলে ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি মুক্তি দেয়া আশু প্রয়োজন ।

মাননীয় তথ্যমন্ত্রী মহোদয়, শুধু তথ্যমন্ত্রী হিসাবেই নয়, একজন চলচ্চিত্রপ্রেমী হিসাবে বিষয়টি বিশেষ বিবেচনা করার আকুল আবেদন জানাচ্ছি। পরিশেষে আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি ।

ধন্যবাদান্তে

জাজ মাল্টিমিডিয়া ও বাংলার আপামর সিনেমাপ্রেমী।

সম্প্রতি, সিনেমাটির পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের হতাশার কথা ব্যক্ত করেছেন।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply