স্মরণে আলাউদ্দিন আলী

|

আলাউদ্দিন আলী (১৯৫৪-২০২০)

তিনি বাংলা গানের ভুবনে এসেছিলেন সুরের পাখি হয়ে। তার সুর করা সেসব গানে কণ্ঠ দিয়ে কালজয়ী হয়েছেন অনেক শিল্পী। তিনি ছিলেন একাধারে সুরকার, সংগীত পরিচালক, বেহালাবাদক, শিল্পী ও গীতিকার। তিনি হলেন আলাউদ্দিন আলী। আজ প্রয়াত এ কিংবদন্তির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে যমুনা নিউজ তাকে স্মরণ করছে গভীর শ্রদ্ধায়।

শুধু ভালোবাসাই নয়, তার সুরে গান করে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী। ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, সহ এমন অসংখ্য দেশপ্রেমময় জনপ্রিয় গানের সুর করেছিলেন আলাউদ্দীন আলী। তার করা এসব গানের সুর দিয়ে ছুঁয়েছে হাজারো সঙ্গীতপ্রেমীর মন।

১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে জন্ম আলাউদ্দিন আলীর। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী আর মায়ের নাম জোহরা খাতুন। দেড় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার মতিঝিলের একটি কলোনিতে চলে আসেন আলাউদ্দীন আলী। তিন ভাই ও দুই বোনের সঙ্গে সেই কলোনিতেই বড় হন গুণী এ শিল্পী।

সংগীতে আলাউদ্দিন আলীর হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর মাধ্যমে। এরপর, ১৯৬৮ সালে বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন তিনি। শুরুটা শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গেও দীর্ঘদিন কাজ করেন তিনি।

তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রেও সংগীত পরিচালনা করেছেন। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’ এবং ‘যোগাযোগ’ চলচ্চিত্রে গানের জন্য মোট আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন যা আমাদের দেশে সুরকার হিসেবে সর্বাধিক।

আজ দু’বছর হয়ে গেল আলাউদ্দিন আলীর মৃত্যুর। ২০২০ সালের ৯ আগস্ট দীর্ঘদিন ফুসফুসের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেন এ কিংবদন্তী। আর সেই সাথে সমাপ্তি ঘটে বাংলা সঙ্গীতের অবিস্মরণীয় এক অধ্যায়ের। তবে শিল্পীরা চলে গেলও আজীবন তাঁরা বেঁচে থাকেন তাদের কর্মের মাঝে। যে অসংখ্য কালজয়ী গান আলাউদ্দিন আলী রেখে গেছেন, সেগুলোর জন্য সঙ্গীতপ্রেমীদের মনে তিনি বেঁচে থাকবেন যুগ যুগান্তর।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply