হয়তো এই মায়েরও ছিল সাজানো সংসার, সন্তান

|

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের ভালোবাসা পৃথিবীর একমাত্র নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। কিন্তু তিক্ত সত্য হলো, কালপরিক্রমায় আমরা হয়ে উঠি অতি নির্মম। প্রকাশ পায় বাবা-মায়ের প্রতি চরম অবহেলা আর অবজ্ঞা। এই মানসিকতা থেকেই কোনো কোনো সন্তান তাদের জোর করে পাঠিয়ে দেয় বৃদ্ধাশ্রমে বা গন্তব্যহীন রাস্তায়।

এমনি এক অসহায় মায়ের দেখা মিললো ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা বাজার এলাকায়। ৭০ বছরের বেশি বয়স, অসুস্থ্য অসহায় উদভ্রান্ত এক মা। নিয়তির নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে একমুঠো ভাতের জন্য কখনও মানুষের বাড়িতে, বাজারে, রাস্তায় অথবা কখনও অলিতে-গলিতে এই অসহায় মায়ের বিচরণ। পরনে মলিন এক টুকরো কাপড়, উদাস দৃষ্টিতে প্রতিনিয়ত খুঁজে ফেরে তার চেনা কিছু মুখ। হয়তো তারও ছিল সাজানো গোছানো সুখের সংসার, ছেলে-মেয়ে আত্বীয়-স্বজন। এখন তার আর কেউ নেই, কী নির্দয় নিদারুণ মানবেতর জীবন-যাপন। তিনি শুধু দুবেলা একটু খারের জন্য রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে কোনো বিত্তশালীর বাড়ির সামনে ঠায় দাড়িয়ে থাকেন আর ফ্যালফ্যাল করে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন একটু সহানুভূতির জন্য, একমুঠো ভাতের জন্য। রুগ্ন শরীর, কথা ঠিকমত বলতে পারেন না। স্থানীয়রা তার বাড়ি বা পরিবারের ঠিকানা বলতে পারেন না। মাঝে মধ্যে দেখা মেলে উপজেলার কোলা বাজার এলাকার রাস্তায় এবং মানুষের বাড়িতে বাড়িতে একমুঠো ভাতের জন্য অপেক্ষা করতে।

এ ব্যাপারে কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন-আল-আজাদ বলেন, আমিও ওই বৃদ্ধ মহিলাকে কোলা বাজারে দেখেছি নাম ঠিকানা জানতে চেয়েছিলাম জবাবে উনি বলেন সহিদুল আমার ভাই আর আমার বাড়ি কোলায়। এরপর আমি কোলা এলাকায় খোঁজ করে ঐ ধরনের কাউকে পাইনি।

তিনি বলেন, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় কোলা নামে একটা গ্রাম আছে আমি সেখানোও লোক মারফৎ খোজ নিয়েছি কিন্তু কেউ সঠিকভাবে তার পারিবার এবং বাড়ির সন্ধান দিতে পারেননি। অসহায় বৃদ্ধার সহযোগিতার বিষয়ে আমি মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে কথিও বলেছি। আসলে আমাদের উপজেলায় এই ধরনের মিসকিনদের রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই।

তিনি আরও বলেন, সমস্যাটা হচ্ছে উনাকে ঠিকমত পাওয়া যায় না। একদিন দেখা মিললে পরবর্তী ৬দিন আর পাওয়া যায় না। আবার হঠাৎ করে দেখা যায় একমুঠো ভাতের আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে। আমি সবাইকে বলে রেখেছি, আবার যদি কোলা এলাকায় তার দেখা মেলে তাহলে আমাকে জানাতে। তার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে বলে কিছু একটা ব্যবস্থা করা য়ায় কিনা আমি চেষ্টা করবো।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply