সময় জমা রাখতে ‘টাইম ব্যাংক’, খরচও করা যাবে

|

প্রতীকী ছবি।

টাকা জমিয়ে রাখার জন্য সব দেশেই বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে। এমনকি, প্রয়োজনীয় রক্তের জন্য ব্লাড ব্যাংকও আছে। ‘টাইম ব্যাংক’ নামে সময় জমিয়ে রাখার ব্যাংকও আছে। ‘সময় ব্যাঙ্ক’এ মানুষ চাইলেই খুব সহজে সময় জমিয়ে রাখতে পারবে।

আজগুবি মনে হলেও সত্যি। এই ‘সময় ব্যাঙ্ক’এর খোঁজ পাওয়া যাবে সুইজারল্যান্ডে। এমনকি, চীনেও রয়েছে এই ব্যাংক। এই ব্যাংকে কোনও মানুষ শুধু সময় জমিয়েই রাখতে পারবে না, প্রয়োজন হলে তা খরচও করতে পারবে। আসলে এক বিশেষ উদ্দেশেই চালু করা হয়েছে এই সময় ব্যাংক। ষাটোর্ধ্ব মানুষদের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে এই ‘সময় ব্যাঙ্ক’।

সুইজারল্যান্ডের কোনও বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার দেখভাল করে ভবিষ্যতের জন্য সময় জমিয়ে রাখতে পারবেন কোনো ব্যক্তি। বয়স্ক মানুষদের দেখভালের জন্য একজন মানুষ যতটা সময় ব্যয় করবে, তিনি ততটা সময়ই ভবিষ্যতের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন।

সময় জমিয়ে রাখার জন্য প্রত্যেক মানুষ প্রয়োজনে সে দেশে একটি ‘সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাকাউন্ট’ খুলতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্টেই বয়স্ক মানুষদের সেবা করে সময় জমাতে পারবে স্বেচ্ছাসেবক তরুণ প্রজন্ম।

সময় জমিয়ে রাখার অর্থ হচ্ছে, বয়স্ক মানুষদের সেবা করে যতটা সময় ব্যয় করবেন ততটা সময় আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হবে। আপনি যখন নিজে ষাটের কোঠা পার করবেন, তখন জমানো সময় ব্যয় করতে পারবেন নিজের জন্য।

ভাবছেন, জমিয়ে রাখা সময় ব্যয় করবেন কীভাবে? আপনার বয়স বাড়লে অন্য এক জন স্বেচ্ছাসেবককে দেখাশুনার দায়িত্ব দেয়া হবে। আপনি তরুণ অবস্থায় যেভাবে কোনও এক বৃদ্ধের সেবা করেছিলেন, আপনিও ঠিক একইভাবে বৃদ্ধ অবস্থায় বিশেষ প্রয়োজনে একজন তরুণ বা তরুণীর সেবা পাবেন।

চিনের রাজধানী বেইজিংয়েও এই সময় জমানোর সুবিধা আছে। তবে সেখানে নিয়ম একটু আলাদা বেইজিংয়ে বৃদ্ধ এবং অসহায় ব্যক্তিদের সেবা করার জন্য এক জন স্বেচ্ছাসেবক যুবক বা যুবতী ঘণ্টা প্রতি একটি করে নির্দিষ্ট মূল্যের কয়েন আয় করতে পারে। বৃদ্ধদের সেবা করে কয়েন জমানো ব্যক্তির বয়স ষাট বছর অতিক্রম করলেই জমানো কয়েন খরচ করতে পারবেন। এই জমানো মূল্য খরচ করা যেতে পারে দুইটি উপায়ে। কোনও ব্যক্তি চাইলে এই জমানো বিশেষ অর্থ তার কোনও আত্মীয়স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবকে দান করতে পারবে। আবার কেউ চাইলে নিজের জন্যও ব্যবহার করতে পারবে এই কয়েন।

এই কয়েনের সাহায্যে এক ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় কিনতে পারেন। অর্থাৎ সেই ব্যক্তি চাইলে তরুণ কোনও স্বেচ্ছাসেবককে তার সেবার কাজে লাগাতে পারবেন নিজের বৃদ্ধ বয়সে। বৃদ্ধদের সেবা করে এই রকম ১০ হাজার কয়েন জমাতে পারলে এক ব্যক্তি সরকারি খরচে সব সুযোগ-সুবিধাসহ সেবাকেন্দ্রে বাকি জীবন আরাম করে কাটাতে পারবেন।

আন্তর্জাতিক এক সংবাদমাধ্যমের সমীক্ষা অনুযায়ী, পুরো বিশ্ব জুড়ে বার্ধক্যের হার বাড়ছে। বর্তমানে ১০ জনের এক জনের বয়স ৬৫ বছরের উপরে। ২০৫০ সালে এই অনুপাত হবে ৬ জনে ১ জন। অর্থাৎ, খুব শীঘ্রই পৃথিবীতে আরও বেশি মানুষের সেবা-শুশ্রূষার প্রয়োজন হবে। আর সেই কথা মাথায় রেখেই সময় বাঁচানোর এই পদ্ধতি বেছে নিয়েছে দুই দেশ।
সূত্র: দ্য প্রেস ডেমক্রেট

এনবি/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply