‘আমি বাঁচতে চাই, আমাকে বাঁচান’

|

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দরিদ্র পরিবারের সন্তান জাকির হোসেনের (১৩) কাঁধের ওপরের টিউমার ক্যান্সারে রুপ নিয়েছে। দিনদিন ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে জাকিরের শরীরে। এতে জাকির অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে মহাখালী জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার (৩০ মে) সকালে জাকিরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পরিবার। কে করবে সহযোগিতা, কে দাঁড়াবেন জাকিরের পাশে? জীবন-মরন সন্ধিক্ষণে জাকিরের চিকিৎসা নিয়ে পুরো অন্ধকার হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন পরিবারের লোকজন।

জাকির হোসেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর সাতগীরি (মওয়ামারি) গ্রামের দিনমজুর আ. মজিদ মিয়ার ছেলে। জাকির সাতগীরি কাটগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

জাকিরের পরিবার জানায়, পাঁচ বছর আগে জাকিরের কাঁধে ছোট আকারের একটি টিউমার দেখা দেয়। আস্তে আস্তে টিউমারটি বড় হতে থাকে। কিছুদিন ধরে টিউমারটি অস্বাভাবিক বড় হলে জাকিরের চলাফেরায় কষ্ট হয়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করলেও টাকার অভাবে ভাল কোন হাসপাতালে তার চিকিৎসা করাতে পারেনি দরিদ্র পরিবারটি। বাধ্য হয়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা আর ঔষধ খেয়ে দিন কাটে জাকিরের।

অন্যদিকে, জাকিরের শরীরে বেড়ে ওঠা টিউমারটি বিশাল আকার ধারণ করে প্রায় দশ কেজিতে রুপ নেয়। একপর্যায়ে জাকির অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৪ মে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শরীরে ক্যান্সারের সন্ধান পান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। পরে জাকিরকে দ্রুত মহাখালী জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয় চিকিৎসকরা।

জাকিরের বাবা আবদুল মজিদ মিয়া বলেন, ‘চিকিৎসকের পরামর্শে জাকিরকে বুধবার (৩০ মে) সকালে মহাখালী ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা আবারও জাকিরের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ঔষধ কিনতে বলেছেন। কিন্তু টাকার অভাবে কিছুই করতে পারছেন না’।

আবদুল মজিদ বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ ছেলের চিকিৎসার এতো খরচ কিভাবে চালাবো। মানুষের কাছে ধার-দেনা করে ছেলেকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছি। এখন দুশ্চিন্তায় আছি তার ঔষধ পত্র কিনবো কি দিয়ে। তিনি জানান বলেন, আমার ছেলেটার চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে সে। আপনারা আমার ছেলের জন্য কিছু একটা করেন। জাকিরের চিকিৎসার জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি’।

অসুস্থ জাকির কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি বাঁচতে চাই, আমার চিকিৎসা করান, আপনারা আমাকে বাঁচান। আমি পৃথিবীর আলোয় বাঁচতে চাই। আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন সকলে’।

স্থানীয় সংবাদকর্মী মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, ‘ শিশুটি টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে এমনটি হতে পারে না। চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। এ পর্যন্ত কয়েকজন সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। কিন্তু সংগ্রহ করা অর্থ অপ্রতুল। তাই জাকিরের অপারেশনসহ চিকিৎসা খরচে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি’।

জাকিরকে সাহায্যে পাঠাতে যোগাযোগ করুন- ০১৭৭০ ৯৯১৬৩৬ (বাবা) ও ০১৭৭৮ ৪৬৫৮২০ (ভাই) এই নাম্বারে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply