পটুয়াখালীতে ব্যবসায়ীর অশ্লীল ভিডিও, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার ৫

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, পটুয়াখালী:

পটুয়াখালীতে ব্যবসায়ী রমেন ঘরামির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলিং, প্রতারণা ও আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা ও সহায়তা করার অভিযোগে প্রধান আসামি নিজাম খাঁসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ও পুলিশ।

বুধবার (২৯ জুন) গভীর রাতে পটুয়াখালী শহরের কাঠপট্টি এলাকা থেকে নিজামের চার সহযোগী ও এর আগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় নিজামকে। আরও গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কাটাখালী গ্রামের নুর মোহাম্মদ খাঁর ছেলে মো. নিজাম খাঁ, কাঠপট্টি এলাকার খালেক হাওলাদারের ছেলে বেল্লাল হাওলাদার, কাদের সিকদারের ছেলে সাইদ সিকদার ওরফে আধার, শাহজাহান গাজীর ছেলে শাহেদ ওরফে মোডা শাহেদ এবং আলতাফ মৃধার ছেলে শাহেদ ওরফে জোকার শাহেদ।

নারায়ণগঞ্জের র‍্যাব ১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (আইন) মশিউর রহমান জানান, রমেন ঘরামিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অভিযোগে দশমিনা থানার একটি মামলার প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২৮ জুন সকাল ১০টার দিকে মিজমিজি এলাকা থেকে নিজাম খাঁকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এ সময় নিজাম তার স্ত্রীর বাসায় অবস্থান করছিলেন। গ্রেফতারের পর নিজাম সবকিছু অকপটে স্বীকার করেছেন এবং এ কাজে আরও যারা জড়িত তাদের নামও বলেছে সে। পরবর্তীতে নিজামকে আমরা পটুয়াখালীর দশমিনা থানায় হস্তান্তর করি।

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাজেদুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত নিজামের স্বীকারোক্তি এবং তার দেখানো মতে বুধবার রাতে পটুয়াখালী শহরের কাঠপট্টি ও লোহালিয়া খেয়াঘাট এলাকা থেকে অপর আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সেটিও আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তাছাড়া যে নারীর সাথে মৃত ব্যবসায়ী রমেন ঘরামির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করানো হয়েছিল সেই নারীকেও খুঁজছি আমরা।

দশমিনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মেহেদী হাসান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের দশমিনা উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের পটুয়াখালী কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাদের রিমান্ডে আনা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, তদন্ত চলছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজন হলে অবশ্যই রিমান্ড চাওয়া হবে।

উল্লেখ্য, টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্যই রমেনের সাথে জনৈক এক নারীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে রমেনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল নিজাম। প্রথম দিকে রমেন লোকলজ্জার ভয়ে দুই লাখ টাকা নিজামকে দিলেও পরবর্তীতে ১৯ জুন আরও টাকার জন্য যখন চাপ দিলে তখনই প্রতারণার অভিযোগ সহ্য করতে না পেরে রমেন ঘরামি গ্যাসের ট্যাবলেট খায়। এক পর্যায়ে কাটাখালি সড়কের ওপর লুটিয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তখন তা ভিডিও করে। এ সময় রমেন নিজামের প্রতারণার কথা বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাকে প্রথমে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে রমেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে পরবর্তীতে সেই ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। মৃত রমেন ঘরামি দশমিনা উপজেলার কাটাখালী গ্রামের রনজিত ঘরামির বড় ছেলে। তিনি পেশায় একজন প্রসাধনী পণ্য ব্যবসায়ী।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply