মাছের মতো দেখতে এই প্রাণীটিই মানুষসহ সব মেরুদণ্ডী প্রাণীর পূর্বপুরুষ, দাবি গবেষকদের

|

জীবাশ্মের ডিজিটাল স্ক্যানের নমুনা। ছবি: সংগৃহীত।

প্রাণীটির আবিষ্কার নতুন নয়। ১৮৯০ সালে স্কটল্যান্ডে একটি গাছের ছালের সাথে ৫ সেন্টিমিটারের মৎস্য আকৃতির এই অদ্ভুত প্রাণীর জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এর বয়স প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন বছর। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘পেলিওস্পনডিলাস গন্নি’। তবে ‌খুব সম্প্রতি এ নিয়ে একটি চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রাণীটিই হতে পারে মানুষসহ পৃথিবীর সকল চারটি অঙ্গ বিশিষ্ট মেরুদণ্ডী প্রাণীর পূর্বপুরুষ।

বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট দ্য সায়েন্স টাইম এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ১৩০ বছর আগে আবিষ্কৃত এই জীবাশ্মটি এতোটাই ছোট এবং পুরনো, যে এর ওপর ভালোভাবে গবেষণা করা অত্যন্ত কঠিন। তবে সম্প্রতি জাপানের একদল গবেষক আবিষ্কার করেছেন, ‘পেলিওস্পনডিলাস গন্নি’র চোয়াল এবং চারটি অঙ্গ ছিল। সে অনুযায়ী মেরুদণ্ডী প্রাণীর বিবর্তনের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার হতে পারে এটি।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এএনইউ) গবেষক ড. ডেইজি হু বলেন, এই রহস্যজনক প্রাণীটি এখন পর্যন্ত পাওয়া জীবাশ্মের মধ্যে সবচেয়ে জটিল শারীরিক গঠনের অধিকারী। তবে বিজ্ঞানীরা অবশেষে এই প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করতে পেরেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এটিই পানি থেকে পৃথিবীর বুকে পা রাখা প্রথম প্রাণী।

বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, মাছের মতো প্রাণীটি চোয়াল এবং চোয়ালবিহীন উভয় প্রকারের বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। যদিও এর শারীরিক গঠন বহু বছর ধরে বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করে এসেছে। এছাড়া আরও কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে পালায়েস্পনডিলুস গন্নির। যেমন দাঁতের অনুপস্থিতি বা হাড়ে রূপান্তরিত চামড়া। প্রায় ১০০ বছরের দীর্ঘ গবেষণার পর এই রহস্য সমাধানের জন্য টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এএনইউ এর সাথে একযোগে শক্তিশালী রিকেন স্প্রিং-8 সিঙ্ক্রোট্রন ব্যবহার করেছেন। এই প্রযুক্তিতে সিঙ্ক্রোট্রন বিকিরণ এক্স-রে ব্যবহার করে জীবাশ্মগুলোতে উচ্চ-রেজোলিউশন মাইক্রো-সিটি স্ক্যান তৈরি করে। এর ফলে জীবাশ্মটির ভেতরের কাঠামোর একটি স্বরূপ বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা পড়ে।

তবে এই প্রাণী নিয়ে এখনও বিস্তর গবেষণা চলছে। বিজ্ঞানীরা এই প্রাণীটি সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে কঠোর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply