মানা হবে না ইমরানের আল্টিমেটাম, আপোষেরও ইচ্ছা নেই পাকিস্তান সরকারের

|

ইমরান খানের আল্টিমেটাম মানা তো দূরের ব্যাপার, আপোষের কোনো ইচ্ছা নেই পাকিস্তান সরকারের। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সাফ জানান, একমাত্র পার্লামেন্টই রাখে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার এখতিয়ার। তিরস্কার করে তিনি বলেন, ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে ক্ষমতা আদায় করতে চাইছে পিটিআই। বিশ্লেষকদের অভিমত, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার ওপর সরকারের সক্ষমতা নির্ভর করছে বলে মতামত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তবে, জোট বেধেই থাকতে হবে পাকিস্তানের ক্ষমতায়। কারণ, কারোরই নেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা।

ইমরান খানের আল্টিমেটাম উপেক্ষা করলেও আজাদী মার্চ ঠেকাতে তৎপরতার কমতি নেই পাকিস্তান সরকারের। এরইমধ্যে, ইসলামাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, ১৪ কোটি ৯০ লাখ রুপির রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে ইমরান খানকে প্রধান অভিযুক্ত করে দায়ের করা হয়েছে মামলা। তবে পিটিআই প্রধানের দাবিদাওয়া মানা হবে না, এমনটা সাফ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার এখতিয়ার একমাত্র পার্লামেন্ট আর জনতার।

শাহবাজ শরিফ বলেন, ইমরান খানকে বলবো, আপনার স্বৈরশাসন চলবে না পাকিস্তানে। যদি নির্বাচনের প্রশ্ন আসেই তাহলে পার্লামেন্ট নেবে তারিখ ঘোষণার সিদ্ধান্ত। আমজনতা ঠিক করবে কবে তারা ভোট দিতে চান। এখন রাজনৈতিক খেলার সময় নয়, বরং জোটবদ্ধ হয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সময়। আসুন, সবাই সংলাপে বসে সঙ্কটের সমাধান করি। আর, পিটিআই প্রধান যদি ভাবেন, ব্ল্যাকমেইল করে ক্ষমতা আদায় করবেন, তাহলে সেটা তার ভুল ধারণা।

বিশ্লেষকরা জানান, রাজনীতির মাঠ গরম করতে ‘আল্টিমেটাম’ ইমরানের মোক্ষম অস্ত্র। তবে, অর্থনৈতিক সংকটের সমাধানের ওপর নির্ভর করছে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ। পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক জারার খুহরো বলেন, নির্বাচনের আল্টিমেটাম দিয়ে রাজনীতির ময়দানে ছক্কা মারলেন ইমরান খান। নিঃসন্দেহে, পিটিআই বড় ধরনের গণ্ডগোল বাধানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ, সরকার বা ইমরান কারোই আপোষের ইচ্ছা নেই। মোদ্দা কথা, দীর্ঘমেয়াদে নতুন সঙ্কটে পড়লো পাকিস্তান। তার ওপর, অর্থনীতির দূরবস্থা যেকোনো মুহূর্তে উল্টে দিতে পারে পাশার দান। জনতা একবার ক্ষীপ্ত হলে তারা টেনে নামাবে সরকারকে।

নতুনভাবে নির্বাচন দিলেও জোট ছাড়া ক্ষমতায় আসার সুযোগ নেই, এমনটাও পর্যবেক্ষণ বিশ্লেষকদের। জারার খুহরো বলেন, এক-দুই-ছয় মাস বা একবছর পর নির্বাচন হলেও সৃষ্টি হবে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের। কারণ, বর্তমান পাকিস্তানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের মতো কোনো দল নেই। কতো বড় জোট হবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু, মসনদে বসতে হলে শরিকদের সমর্থন লাগবেই। এই মুহূর্তে, জোট গঠনের ক্ষেত্রে পিটিআই থেকে অনেকাংশে এগিয়ে পিএমএলএন।

গত এপ্রিলে নানা নাটকীয়তায় প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর পরই আঁটঘাঁট বেঁধে মাঠে নেমেছেন ইমরান খান। তার জোরালো অভিযোগ হচ্ছে, তার সরকারের পতনের পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কলকাঠি। যাতে, ইন্ধন যুগিয়ে মসনদে বসেছে শাহবাজ-বিলাওয়াল জোট।

আরও পড়ুন: ইমরান খানকে প্রধান আসামি করে ইসলামাবাদ পুলিশের মামলা

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply