বিমানবন্দরে উদ্ভট ভোগান্তি

|

পর্যাপ্ত ট্রলি না থাকায় মাথায় করে লাগেজ বহনে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।

বিমানবন্দরে উদ্ভট ভোগান্তি; এখনো ট্রলি সঙ্কট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কাস্টমসেই কেটে যাচ্ছে বিদেশফেরত যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়। টয়লেটের মেঝে এখনও নোংরা দেশের প্রধান এ বিমানবন্দরে। এমনকি এয়ারপোর্ট পৌঁছে ঠিকঠাক তথ্যও পান না বিদেশগামীরা। এমন নানান অভিযোগ যাত্রীদের। শাহজালাল বিমানবন্দরের নতুন পরিচালকের দাবি, শিগগিরই কেটে যাবে এসব সঙ্কট। ওদিকে যাত্রী ভোগান্তি কমাতে শুরু হয়েছে মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং।

টার্মিনাল ১ থেকে ২ পর্যন্ত বিমানবন্দরের এমাথা থেকে ওমাথা বারবার চক্কর খাচ্ছিলেন সৌদি আরবগামী যাত্রী মো. শফিকুল। কিন্তু, কেন? এভাবে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে কেন ঘুরছেন? জিজ্ঞেস করা হলে শফিকুল বলেন, ট্রলি পাচ্ছি না স্যার। আমি দুইদিকেই খোঁজাখুঁজি করে এসেছি, কোথাওই ট্রলি পাওয়া যাচ্ছে না। দায়িত্বরত যারা আছেন তারা কোনো সাহায্য করেছেন কী না জানতে চাইলে শফিকুল বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে জানিয়েছি কিন্তু তিনি কোনো সাড়া দেননি। শফিকের মতো এমন অনেকেই বিমানবন্দর এসে হন্যে হয়ে ট্রলি খোঁজেন। পরে জানা গেছে, বিমানবন্দরের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত মোট ৫ বার ঘুরে অবশেষে লাগেজ ট্রলি পেয়েছেন শফিকুল। ট্রলি শেষমেষ পাওয়া গেলেও শফিকুল জানালেন ভেতরে আরও ভোগান্তি অপেক্ষা করছে।

শফিকুলের মতো অনেকেই বিমানবন্দরে এসে হন্যে হয়ে ট্রলি খোঁজেন। যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রলি পাওয়া যাচ্ছে না। গেট থেকে শুরু করে ভেতরে সব জায়গাতেই চলছে অনিয়ম। কেউ একজন ব্যাগ রাখলে বাকিদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় ট্রলির জন্য। সঙ্কট দেখে কেউ আবার ৪ ঘণ্টা আগেই বসে আছেন ট্রলি দখল করে। যারা এভাবে ট্রলি দখল করে ছিলেন তাদের জিজ্ঞেস করা হলে তারা সকলেই একমত হন যে, এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা ট্রলি আটকে না রাখলে আরও অনেকেই উপকৃত হতেন। কিন্তু, মুখে বললেও বাস্তবে তা মানছেন না যাত্রীরাও।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বললেন, সঙ্কট সমাধানে শিগগিরই যোগ হচ্ছে আরও ১ হাজার ট্রলি। বরাদ্দ প্রক্রিয়া চলছে, খুব শীঘ্রই আমরা আরও বেশ কিছু ট্রলি পেয়ে যাবো। আমরা মনে করছি, ট্রলি সমস্যার অনেকটা সমাধান আমরা ইতোমধ্যেই করে ফেলেছি, আশা করছি যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরের পরিবেশ খুব শীঘ্রই যাত্রীদের জন্য আরও কমফোর্টেবল হয়ে উঠবে।

বিমানবন্দরের ভেতরেও শেষ নেই ভোগান্তির। ফ্লাইট থেকে নেমে ইমিগ্রেশনের অপেক্ষায় দীর্ঘলাইন। ততক্ষণেও আসে না লাগেজ। তারওপর আরেক বাধা কাস্টমস পেরুতে বিলম্ব। কাস্টমসে দাঁড়ানো এক যাত্রী বলেন, অন্যান্য দেশে যাত্রী পৌঁছানোর আগেই লাগেজ পৌঁছে যায়, কিন্তু আমাদের দেশে এ প্রক্রিয়াতে সময় লাগে, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

কি করে হবে এসবের সমাধান? বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, অধিক সংখ্যক ফ্লাইট একই সময়ে হলে এমনটা হয় অনেক সময়, এক্ষেত্রে সময় লাগতে পারে। এটা ছাড়া আমাদের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করার এবং আমরা সেটা মনিটর করছি বলে জানান তিনি।

দেশের সবচেয়ে বড় আর প্রধান বিমানবন্দর এটি। ভেতরে বাইরে নোংরা এর পরিবেশ। বিদেশ ফেরত যাত্রীদের অভিযোগ বিমানবন্দরের টয়লেট নিয়েও। বলছেন, ওয়াশরুম খুবই নোংরা।

এ এমন এক বিমানকবন্দর যেখানে দিনরাত দাঁড়িয়ে থাকে হাজারো মানুষ। কোন কারণ ছাড়া। ১ জনকে বিদায় দিতে আসেন ১০ জন। যাত্রী চলে যান, আত্মীয় থেকে যান বিমানবন্দরেই। এ প্রসঙ্গে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে এত বিশাল সংখ্যক যাত্রীদের সাথে সাথে বিশাল সংখ্যক আত্মীয় থাকা আমাদের জন্য চাপের।

ঢাকা শহরে চিত্ত বিনোদনের জায়গার অভাবে এমনটা হতে পারে বলেও মনে করেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply