টেলিকম খাতে কিছু না করেই গ্রাহকের ৬০ শতাংশ অর্থ যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে

|

মধ্যস্বত্বভোগী প্রতিষ্ঠানের মুনাফা নিশ্চিত করতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। কিছু না করেই মোট খরচের ৬০ শতাংশ নিয়ে যাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, গ্রাহক সেবায় এই কোম্পানিগুলোর কোনো অবদান তো নেই, উল্টো এতে সেবার মান ব্যাহত হচ্ছে।

টেলিকম খাতের মতো ইন্টারনেট সেবাতেও গ্রাহকের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে মধ্যস্থ কোম্পানি। রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান বিএসসিসিএল বা বেসরকারি আইটিসি অপারেটর থেকে সরাসরি ব্যান্ডউইথ কিনতে পারছে না ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা। সরবরাহকারীদের কাছে থেকে ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে কেবল মধ্যস্থ ৩৭টি আইআইজি অপারেটর। এরপর তাদের নিকট থেকে গ্রাহকদের জন্য বাড়তি অর্থ দিয়ে সেই ব্যান্ডউইথ সংগ্রহ করছে আইএসপি অপারেটররা। অথচ মূল সরবরাহকারীদের কাছে থেকে সরাসরি ব্যান্ডউইথ ক্রয়ের ক্ষেত্রে সব ধরনের অবকাঠামো সুবিধা বহাল আছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই নিয়ম পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়েছিল উল্লেখ করে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, আইইজি শুধু ব্যান্ডউইথ, সাবমেরিন বিএসসিসিএল বা আইটিসির কাছ থেকে কিনে মাঝখানে একটা রাউটার দিয়ে আমাকে প্রোভাইড করছে, যার কোনো দরকার ছিল না। একই পণ্য চারটি কোম্পানিকে ভ্যাট দিচ্ছে, চারটি কোম্পানি তার প্রোফিট মার্জিন অ্যাড করছে।

আইএসপিবি’র তথ্যানুযায়ী, গ্রাহকের প্রতি একশো টাকার মধ্যে ৬০ টাকাই যাচ্ছে মধ্যস্থ এসব প্রতিষ্ঠানের পকেটে। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ইকো সিস্টেমে পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয় এসব লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর গ্রাহক সেবায় কোনো ভূমিকা নেই। আবার তাদের জন্য সেবার মানও ব্যাহত হচ্ছে।

অ্যামটবের সেক্রেটারি জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, মধ্যস্থ এসব কোম্পানি যতো বেড়ে যাচ্ছে তাতে গ্রাহকদের সেবা দিতে যেমন সমস্যা হয়, তেমনই গ্রাহকের ব্যয়ও বেড়ে যায়। একই সুরে কথা বললেন রবির চিফ কর্পোরেট রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স মো. শাহেদ আলম। তিনি বললন, ইকো সিস্টেমে এসব মধ্যস্থতাকারীদের কোনো ভূমিকাই নেই। বিভিন্ন বিভিন্ন দেশে এই নিয়ম প্রথমত নেই, উল্টো যে দেশগুলোতে ছিল তারাও এটিকে তুলে নিচ্ছে।

বিটিআরসি ২০০৭ সালে প্রণয়ন করে ইন্টারন্যাশনাল লং ডিসটেন্স টেলিকিমউনিকেশন সার্ভিস (আইএলডিটিএস) নীতিমালা। যার আওতায় দেয়া হয় এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। তবে ২০২৬ সালের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply