ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে শিশুখাদ্যের তীব্র সঙ্কট

|

ছবি: সংগৃহীত

শিশুখাদ্যের ভয়াবহ সঙ্কট চলছে যুক্তরাষ্ট্রে জুড়ে। বাজার ঘুরেও মিলছে না শিশুদের জন্য দুধ এবং ইন্সট্যান্ট ফুড। করোনা মহামারির পর রুশ-ইউক্রেন সংঘাতের কারণে কমে গেছে শিশুখাদ্য তৈরির কাঁচামালের সরবরাহ। জ্বালানি এবং আনুষাঙ্গিক দ্রব্যের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে শিশুখাদ্যের ওপর।

নিউইয়র্কের একটি সুপার শপ ঘুরে দেখা যায়, খালি পড়ে রয়েছে শিশুখাদ্যের সারি সারি তাক। পুরো দোকানে নানারকম পণ্য থাকলেও, ভিন্ন চিত্র শিশুখাদ্যের ক্ষেত্রে। সরবরাহ কম থাকায় নেই শিশুখাদ্য। ফলে চরম সঙ্কটে শিশু এবং অভিভাবকরা।

সুপারশপে আসা মার্কিন এক নাগরিক বলেন, আমার বাচ্চার বয়স দুই বছর। এই সময় তার জন্য উপযোগী খাবার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। অথচ বাজার ঘুরে বাচ্চার কোনো খাবার পাচ্ছি না। কেন আমার বাচ্চার খাবার পাবো না! গেল তিন মাস ধরে একই ঘটনা ঘটছে। আমি আমার বাচ্চার জন্য খাবার চাই।

চলতি মাসের শুরুতেই চাহিদার অর্ধেকে নেমে আসে যোগান। বাজারে শিশুখাদ্য যা-ই আছে, তার দাম নাগালের বাইরে। ফলে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি।

শিশুখাদ্য না থাকায় আক্ষেপ করে আরেক মার্কিন নাগরিক বলেন, যেসব মায়েরা বাচ্চাকে বুকের দুধ দিতে পারেন না, তাদেরকে নির্ভর করতে হয় এই বেবিফুডের ওপর। বাজারের এই পরিস্থিতিতে আমরা কী অবস্থায় আছি একবার কল্পনা করুন।

কর্তৃপক্ষ বলছে, গেল দুই বছর ধরে করোনা মহামারির কারণে কাচামালের যোগান আর তৈরি শিশুখাদ্য সরবরাহে সঙ্কট ছিলোই। তার ওপর ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বিশ্বব্যাপী বেড়েছে জ্বালানিসহ কাচামাল এবং আনুষাঙ্গিক পণ্যের দাম। এতে কমে গেছে শিশুখাদ্যের উৎপাদন। যার কারণে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে দেখা দিয়েছে হাহাকার।

রিপাবলিকান নেতা অ্যান্ডি হ্যারিস বলেন, সঙ্কটময় পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে সেটার জন্য এফডিএ আছে। কিন্তু তারা কেন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না? মানুষের ট্যাক্সের অর্থ তাহলে কী কাজে লাগলো? সঙ্কটের কারণে যে এরকম পরিস্থিতি হবে সেটা কেন তারা বুঝতে পারলো না।

মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক সংস্থা এফডিএ জানায়, গেল ফেব্রুয়ারিতে অ্যাবট নিউট্রিশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে ৪ শিশু। এরপর বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হয় প্রতিষ্ঠানটির সব খাবার। বন্ধ করে দেয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় কারখানাটি। এ কারণেই সৃষ্টি হয়েছে সঙ্কট।

এফডিএ কমিশনার ডা. রবার্ট ক্যালিফ বলেন, বৈশ্বিক কাচামালের সঙ্কটের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে একটি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সঙ্কট। আগামী সপ্তাহেই কারখানাটি চালু হবে। এর পাশাপাশি আমরাও কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

শিশুখাদ্যের চাহিদা মেটাতে অভিভাবকরা বাড়িতেই তৈরি করছেন খাবার। জরিপ বলছে, বাড়িতে শিশুদের খাবার তৈরির ফর্মুলা জানতে গুগলে খোঁজার হার বেড়েছে প্রায় আড়াই হাজার গুণ।

সূত্র: আল জাজিরা, গার্ডিয়ান।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply