চিকিৎসা সেবায় দুর্বল উত্তর কোরিয়া, মহামারি নিয়ন্ত্রণে পাশে দাঁড়ালো চিরবৈরী দক্ষিণ কোরিয়া

|

মহামারির দুই বছরের বেশি সময় নিজেদের করোনামুক্ত দাবি করা উত্তর কোরিয়া এখন লড়ছে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে। যদিও করোনা পজেটিভের আসল সংখ্যা প্রকাশ করছে না তারা। পিয়ংইয়ং বলছে, দেশটির ১০ লাখের বেশি মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা অর্ধ শতাধিক। কিম জং উন প্রশাসন নিজেরাই স্বীকার করেছে, চিকিৎসা সেবায় দুর্বলতার কথা। এ পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী চিরবৈরী দক্ষিণ কোরিয়া।

মহামারির দুই বছরের বেশি সময় পর বিশ্ব যখন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরেছে, তখনই করোনা ভাইরাসের সাথে লড়াইয়ের কথা বলছে উত্তর কোরিয়া। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। দেশটিতে টেস্টিং কিটের সংকট থাকায় জ্বরকেই দেখা হচ্ছে প্রধান উপসর্গ হিসেবে। পিয়ংইয়ং বলছে, সোমবারই দেশটিতে জ্বর শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার মানুষের দেহে। এপ্রিলের শেষ থেকে এ পর্যন্ত করোনার উপসর্গ মিলেছে ১২ লাখ মানুষের শরীরে। মারাও গিয়েছে অর্ধ শতাধিক। এই মুহূর্তে কোয়ারেন্টাইনে আছে ৫ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে কিম জং উন প্রশাসনের নানা তৎপরতা। ওষুধ বণ্টনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ নেতা কিম। জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন তিনি। করোনা বিধিনিষেধ সংক্রান্ত নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। দেশটির জনস্বাস্থ্য বিভাগের ভাইস মিনিস্টার কিম হিয়ং হুন বলছেন, কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে জরুরি। দেশজুড়ে জ্বর বা করোনার উপসর্গ আছে এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এখনও করোনা টিকা কর্মসূচি শুরু করেনি বিশ্বের মাত্র দুটি দেশ। একটি ইরিত্রিয়া, অপরটি উত্তর কোরিয়া। করোনা বিস্তারের ভয়াবহতার মধ্যেও প্রথাগত ওষুধের ওপরই ভরসা দেশটির। উত্তর কোরিয়ায় করোনার উপসর্গে বড়জোর সাধারণ পেইন কিলার ও জ্বর-ঠান্ডার ওষুধ খেতে বলা হচ্ছে। গুরুতর হলে দেয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। এমনকি প্রচারণা চলছে ঘরোয়া টোটকারও।

এমন পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বৈরী প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল দক্ষিণ কোরিয়ার করোনা সংকটে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, রাজনৈতিক বা সামরিক বিবেচনার বাইরে মানবিক সহায়তার দরজা খোলা থাকবে। উত্তর কোরিয়া চাইলে ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, স্বাস্থ্যকর্মীসহ সব ধরনের সহায়তা করবেন তারা।

প্রসঙ্গত, দুই বছরের বেশি সময় নিজেদের করোনামুক্ত দাবি করা উত্তর কোরিয়া গত বৃহস্পতিবার প্রথম কোভিড রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয়।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply