রুশ আগ্রাসনে বিপর্যস্ত ইউক্রেনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, বিপাকে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা

|

বিধ্বস্ত একটি ইউক্রেনীয় হাসপাতাল। (সংগৃহীত ছবি)

রুশ আগ্রাসনে বিপর্যস্ত ইউক্রেনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এতে বিপাকে পড়েছেন দেশটির অন্তঃসত্ত্বা নারীরা। এমন পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন সীমান্তবর্তী লভিভ অঞ্চলে। যুদ্ধ পরিস্থিতি মা ও শিশুদের শরীর ও মনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে উদ্বেগ জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

মাস তিনেক আগেও স্বামীকে নিয়ে রাজধানী কিয়েভে ছোট্ট গোছানো সংসার ছিল নাতালিয়া সুহোৎসার। অনাগত সন্তানের আগমনের প্রত্যাশায় প্রহর গুনছিলেন তারা। রুশ-ইউক্রেন উত্তেজনা ওলটপালট করে দেয় সবকিছু। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েন গর্ভকালীন শেষ সময় পার করা নাতালিয়া।

রুশ আগ্রাসনে নাতালিয়ার মতো দুর্দশাগ্রস্ত ইউক্রেনের হাজারো গর্ভবতী নারী। তাদের জন্য সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে সীমান্তবর্তী লভিভ অঞ্চল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সেখানকার ম্যাটার্নিটি হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে অন্তঃসত্ত্বা নারীর সংখ্যা।

গণমাধ্যমকে নাতালিয়া সুহোৎসা বলেন, হঠাৎ একদিন সকালে সাইরেনের আওয়াজ শুনতে পাই। এরপর দেখলাম রুশ বাহিনী হামলা চালিয়েছে। এ দৃশ্য দেখার পর হতবাক হয়ে ছিলাম। সেদিনই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। কোনোমতে পালিয়ে এখানে চলে আসি। আমি চাই না এমন পরিস্থিতিতে আমার সন্তান জন্ম নিক। বেজমেন্ট বা বাঙ্কারে আমি সন্তান জন্ম দিতেও চাই না। আর কাউকেই যেনো এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় সেটাই প্রত্যাশা।

যুদ্ধকালীন প্রভাব পড়ছে মাতৃত্বের ওপর, যা নিয়ে আশঙ্কা জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, মায়েদের দুশ্চিন্তা ও শারীরিক ভোগান্তির ফলে ঘটছে প্রিম্যাচিউর শিশু জন্মের ঘটনা। এতে শিশুদের সুস্থতা ও শারীরিক বিকাশে পড়ছে সরাসরি প্রভাব।

লভিভের ওই হাসপাতালের চিকিৎসক লিলিয়া মাইরোনোভিচ বলেন, কিছু কিছু শিশু নির্ধারিত সময়ের আগেই জন্ম নিচ্ছে। কারণ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মায়েরা মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন। অনেকে আবার অনেক দূরের পথ পাড়ি দিয়ে এখানে আসছেন। ফলে দেখা দিচ্ছে নানা রকম শারীরিক জটিলতা। বাধ্য হয়েই অস্ত্রোপচারের পথ বেছে নিতে হচ্ছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতির অবসান হোক আর সদ্যজাত বা অনাগত শিশুরা বেঁচে থাক সুস্থ পরিবেশে, এমনটাই প্রত্যাশা দুর্দশাগ্রস্ত এসব মায়েদের।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply