শুভ জন্মদিন মৃণাল সেন

|

কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন (১৯৫৫-২০১৮)

উপমহাদেশীয় বাংলা চলচ্চিত্রের ‘লিজেন্ডারি ট্রায়ো’ বলা হয় সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণালকে। তিনজনই ছিলেন নিজ নিজ স্থানে অতুলনীয়। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটকের পর মৃণাল সেন এমন একজন পরিচালক যার হাত ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রবর্তন ঘটে এক নতুন ধারার। আজ কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেনের ৯৯তম জন্মদিন।

কিংবদন্তি এ চিত্র পরিচালকের জন্ম ১৯২৩ সালে বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুরে। ফরিদপুরেই কেটেছে তার শৈশব। ফরিদপুরে হাইস্কুলের লেখাপড়া শেষে উচ্চশিক্ষার জন্য সপরিবারে পাড়ি দেন কলকাতায়। সেখানে প্রথমে স্কটিশ চার্চ কলেজ ও পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় পড়াশোনা করেন মৃণাল সেন।

চল্লিশের দশকে তিনি সমাজবাদী সংস্থা ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যুক্ত হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে সাংবাদিক, ওষুধ বিপণনকারী এবং চলচ্চিত্রে শব্দ কলাকুশলী হিসেবেও কাজ শুরু করেন মৃণাল।

সালটা ১৯৫৫, ‘রাতভোর’ দিয়ে সিনেমায় হাতেখড়ি মৃণালের। যদিও খুব একটা সাফল্য পায়নি রাতভোর। তবে মৃনালকে পরিচিতি এনে দেয় তার দ্বিতীয় সিনেমা ‘নীল আকাশের নীচে’। আর তৃতীয় সিনেমা ‘বাইশে শ্রাবণ’ থেকে পান আন্তর্জাতিক পরিচিতি। তারপরের ২০ বছরে একের পর এক সিনেমা করেছেন প্রচলিত ধারণার বাইরে বেরিয়ে।

তার নির্মিত ‘আকাশকুসুম’, ‘মৃগয়া অন্যযাত্রা’, ‘কলকাতা-৭১’, ‘মহাপৃথিবী’, ‘ওকাউরি কথা’ ও ‘অন্য ভুবন’-এ মৃণাল ছুঁয়ে গেছেন সময়কে। সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতাকে তিনি যেভাব তার সিনেমায় তুলে ধরেছেন তা অন্য সমকালীন অন্য কোনো ভারতীয় পরিচালক পারেননি। ১৯৬৯ সালে তার পরিচালিত ‘ভুবন সোম’ মুক্তি পায়। অনেকের মতে এটিই মৃণালের শ্রেষ্ঠ সিনেমা।

বাংলা ছাড়াও হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু প্রভৃতি ভাষায়ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন মৃণাল। দেশ-বিদেশে অজস্র পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন তিনি। ১৯৮১ সালে ভারত সরকারের দেয়া পদ্মভূষণ লাভ করেন। ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান। ফরাসি সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ নাগরিক পদক কম্যান্ডার অফ দি অর্ডার অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস সম্মানে সম্মানিত করে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অর্ডার অফ ফ্রেন্ডশিপ সম্মানে ভূষিত করেন। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলির প্রায় সবকটি বড় চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কার জয় করেছে।

/এসএইচ



সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply