আমরা কী করি, এতো এতো আইন দিয়ে হাত-পা বেঁধে দিতে হবে: মাহফুজ আনাম

|

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম।

গণমাধ্যম কর্মীদের অপরাধ কী? যে কারণে তারা জামিনও পাবেন না! এমন প্রশ্ন তুলেছেন সম্পাদক পরিষদ। সংগঠনটির নেতারা অভিযোগ করেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৪টি জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে। সংশোধনের আশ্বাস দিয়ে চার বছরেও আইন মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন করেনি বলে অভিযোগ তাদের।

শনিবার (১৪ মে) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডের সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস: ডিজিটাল নজরদারিতে সাংবাদিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব অভিযোগ করেন সম্পাদক পরিষদের নেতারা।

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম বলেন, আমরা কী করি? এর জন্য আমাদের এতো এতো আইন দিয়ে হাত-পা বেঁধে দিতে হবে। একজন সাংবাদিক কী অপরাধে অপরাধী? যাকে জামিনও দেয়া যাবে না। যে আইনে ১৪টি জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে।

গণমাধ্যম যখন রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ তখন এর সুরক্ষা না দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নিপীড়নমূলক আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মাহফুজ আনাম। বলেন, এতে সাংবাদিকতা বিকশিত না হয়ে অবরুদ্ধ হচ্ছে।

অন্যদিকে, ভোরের কাগজের সম্পাদক সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রশ্ন তোলেন, যদি সর্বক্ষণ আপনার মাথায় থাকে, পিছনে একজন আছে, যিনি আপনার ওপর নজরদারি করছেন। তাহলে সেটাকে কি মুক্ত সাংবাদিকতা বলা যাবে?

সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সভাপতি এ কে আজাদ জানান, সাংবাদিকদের জন্য অনেক ঝুঁকি তৈরি করেছে। তাদের ওপর নজরদারি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল জানান, আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, এই আইনের যদি অপ্রপ্রয়োগ হয়, কোনো সংবাদিক যদি আক্রান্ত হয়, আইনজীবী হিসেবে বিনে পয়সায় তিনি লড়াই করবেন। আরে নরসিংদী, সাতক্ষীরাতে সাংবাদিক ধরা পড়ে। কই সাংবাদিক, কই আইনমন্ত্রী, কই বিনামূল্য; কিছুই তো হয় না।

গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ এবং সংকট থেকে বের হতে সব মত-পথের সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।

মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, এ অবস্থায় সম্মিলিতভাবে আমাদের উদ্যোগটা নিতে হবে। বিভাজন থাকলে এর থেকে কোনোভাবেই বের হয়ে আসতে পারবেন না।

আর নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবীর বলেন, সাংবাদিকতা, স্বাধীনতা শুধুমাত্র সাংবাদিকদের প্রয়োজন নয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার ইনপুটসগুলো দেয়ার সুযোগের জন্য এটি জনসাধরণেরও দরকার।

সম্পাদক পরিষদ, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট নিপীড়নমুলক আইনের সংশোধন না হলে বাতিলের জন্য আন্দোলনের কথাও জানিয়েছে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply