পোশাক নিয়ে তালেবানের নতুন কড়াকড়িকে কীভাবে দেখছেন নারীরা?

|

নারীদের পোশাক নিয়ে তালেবান সরকারের নতুন কড়াকড়িতে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানে। শিক্ষা ও কাজের সুযোগ বন্ধের পর এবার নারীদের পর্দা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত দেশটির নারীরা। তালেবান সরকারের দাবি, ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী নারীদের সম্মান রক্ষাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

শনিবার (৭ মে) এক ডিক্রি জারি করে বলা হয়, মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পুরো শরীর ঢেকে রাখতে হবে নারীদের। চোখ ছাড়া গোটা চেহারাও রাখতে হবে আব্রুর ভেতর। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম শাসনামলে পুরো শরীর ঢাকা যে নীল বোরকা বাধ্যতামূলক ছিল সেটাই সবচেয়ে আদর্শ পোশাক বলে মনে করে তারা। খুবই বৃদ্ধ ও শিশুরা থাকবে এই নির্দেশনার আওতামুক্ত। খুব প্রয়োজন ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছে তারা।

তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের ৯৯ শতাংশ নারীই হিজাব পরে আমাদের নির্দেশ ছাড়াই। কারণ তারা মুসলিম। তারা জানে এটাই তাদের সম্মান।

এদিকে গত আগস্টে পরিবর্তনের কথা বলে ক্ষমতা নেয়া তালেবান এখনও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। বরং মেয়েদের জন্য স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করায় তাদের নিয়ে বেড়েছে সমালোচনা। এর মধ্যেই পোশাক নিয়ে কড়াকড়ির আতঙ্ক ছড়িয়েছে নতুন করে।

রয়টার্সের একটি খবরে বলা হচ্ছে, তালেবানের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে কোনো নারী মুখ না ঢাকলে তার বাবা অথবা নিকটতম পুরুষ আত্মীয়কে এর জন্য শাস্তি দেয়া হবে। এমনকি কারাবরণ অথবা সরকারি চাকরি থেকে বহিষ্কািও করা হতে পারে তাদের। ক্ষমতা নেয়ার পর এটাই ইসলামপন্থী গোষ্ঠিটির সবচেয়ে কঠিন নির্দেশনা।

এমন বিধিনিষেধ নিয়ে দেশটির নারী অধিকার কর্মী নার্গিস নেসার রয়টার্সকে বলছেন, শুরুতে তারা স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করলো, এখন মুখ ঢাকাও বাধ্যতামূলক। এদেশে বসবাস অর্থহীন। মনে হয় যেন কারাগারে আছি। এখানে খাওয়া আর ঘুম ছাড়া সবকিছুই তালেবানের ইচ্ছা অনুযায়ী করতে হবে।

এর আগেও নারীদের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। ইতোমধ্যে তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। বাইরে কাজের অনুমতিও দেয়া হচ্ছে না। নারীর অধিকার হরণ ও বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি অনেক ইসলামিক দেশেও তালেবান সরকার সমালোচিত।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply