রেলমন্ত্রীকে সাময়িক সময়ের জন্য পদত্যাগের আহ্বান টিআইবির

|

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ফাইল ছবি।

রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বরখাস্তের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নৈতিক অবস্থান থেকে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামকে সাময়িক সময়ের জন্য পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

শনিবার (৭ মে) টিআইবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে পাবনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনের এসি কামরায় ভ্রমণ করছিলেন তিন যাত্রী। তাদের কাছ থেকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেন দায়িত্বরত টিটিই শফিকুল ইসলাম। এ ঘটনার পরই শফিকুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

এ ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত’ উল্লেখ করে টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ন্যায়নিষ্ঠভাবে দায়িত্বপালনের কারণে পুরস্কার পাওয়ার বদলে টিটিইকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তে দেশবাসীর কাছে এ বার্তাই পরিষ্কার হয়েছে যে, ক্ষমতাধরেরাই শুধু নন, তাদের প্রভাব বলয়ের মধ্যে থাকা আত্মীয়-পরিজনদের জন্যও আইন প্রযোজ্য নয়।

এ ঘটনাকে ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি ‘নির্লজ্জ ও নিকৃষ্টতম’ উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এখানে মূলত দুইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত, রেলমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়দের বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ। অর্থাৎ, তারা ধরেই নিয়েছিলেন যে রেলের প্রচলিত আইন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট টিকিট পরিদর্শক তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করায় তাকে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করেই তাৎক্ষণিকভাবে মুঠোফোনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা।

টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিনা টিকিটের যাত্রীরা টিটিইকে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় কেন দিয়েছিলেন? তাদের সত্যিকার পরিচয় রেল কর্তৃপক্ষ যাচাই করেছিল কিনা? যাত্রীদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগের জেরে টিটিইর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে রেলমন্ত্রীর পরিচয় কতোটা প্রভাব বিস্তার করেছিল? এসব বিষয় পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।

ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নৈতিক অবস্থান থেকে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামকে সাময়িক সময়ের জন্য পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টিআইবি মনে করে, যেহেতু রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের জড়িয়ে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, অধিকন্তু বিনা টিকিটে ভ্রমণকারী ব্যক্তিরা রেলমন্ত্রীর পরিচয় ব্যবহার করেছেন, তাই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নৈতিক অবস্থান থেকে সাময়িক সময়ের জন্য তার (রেলমন্ত্রী) পদত্যাগ করা উচিত।

বিনা টিকিটে ভ্রমণের জন্য জরিমানা ও টিটিইকে বরখাস্তের বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। মন্ত্রীর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি সাড়া দেননি এবং পরে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply