বিষ কিনতে গিয়ে দোকানির সাথে প্রেম, বিয়ে না করায় ফের বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা

|

স্টাফ রিপোর্টার, পটুয়াখালী:

স্বামীর সাথে কলহের জেরে আত্মহত্যার জন্য বিষ কিনতে গিয়ে দোকানির সাথে প্রেম, সেই প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ফের বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে চাঞ্চল্য তৈরি করেছেন এক তরুণী। টানা পাঁচ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করার পর প্রেমিকাকে না পেয়ে বাবার বাড়িতে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সীমা আক্তার (২০) নামের সেই তরুণী।

শুক্রবার (৬ মে) রাতে কীটনাশক জাতীয় কিছু খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার দুপুরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন সীমা।

এদিকে বিয়ের দাবিতে পাঁচদিন ধরে সীমা তার প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করলেও প্রেমিক রায়হান আত্মগোপন করে আছেন বলে জানা গেছে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালীর শনিবার এ ঘটনাটি প্রকাশ পেলে দিনভর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

জানা গেছে প্রেমিক মো. রায়হান হোসেনের (২৫) বাবার সার ও কীটনাশকের দোকান রয়েছে উপজেলার সুবিদখালী বাজারে। সে দোকানে রায়হানও বসতেন।

সীমা আক্তার জানান, সাড়ে চার বছর আগে দক্ষিণ কলাগাছিয়া গ্রামের মো. শহীদুল্লাহর সাথে পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিন বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর গত আট মাস আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা করেন তিনি। সেজন্য একদিন বাড়ি থেকে বের হয়ে সুবিদখালী বাজারে রায়হানের কীটনাশকের দোকানে বিষ কিনতে যান। তখন রায়হান বুঝিয়ে সীমাকে বিষপান থেকে বিরত করেন।

সীমা আরও জানান, সেই থেকে রায়হানের সাথে তার সম্পর্কের শুরু। প্রায় সাত মাস আগে থেকে ধীরে ধীরে তা প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়। এমন সময় রায়হান আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। কয়েক দিন আগে কৌশলে রায়হান আমাকে দিয়ে আমার স্বামী শহীদুল্লাহকে তালাকও দেওয়ায়। এরপর বিয়ের জন্য চাপ দিলে রায়হান বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।

সীমা জানান, রায়হানের মতিগতি ভালো না হওয়ায় আমি গত সোমবার (২ মে) বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অবস্থান নেই। কিন্তু আমাকে দেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় রায়হান। গত পাঁচদিন ধরে আমি তার বাড়িতে অবস্থান করলেও রায়হান একবারের জন্যও আমার কোনো খোঁজ খবর নেয়নি। তাছাড়া রায়হানের বাবা-মাও আমার সাথে তেমন ভালো ব্যবহার করেননি।

শুক্রবার রাতে আমার বাবা খবর পেয়ে রায়হানের বাড়িতে এলে আমি বাবার সাথে আমাদের গ্রামের বাড়িতে চলে যাই। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় কোনো উপায় না পেয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। কিন্তু পরিবারের লোকজন টের পেয়ে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সমাজের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে সীমা জানান, সবাই আমার শরীরটাকে শুধু ভালবাসে আমাকে কেউ ভালোবাসে না, আমাকে কেউ বুঝতে চায় না। তাই এই পৃথিবীতে থাকার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও মরতে পারি না। কোন লজ্জায় মুখ দেখাবো বলেন আপনারা?

জানতে চাইলে মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, তরুণীটি বাবার বাড়িতে বসে বিষপান করেছে বলে জানতে পেরেছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। লোকমুখে শোনা গেছে, পরকীয়া প্রেমে বার্থ হয়ে মেয়েটি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রায়হানের ব্যবহৃত ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply