আত্মীয় কিনা জানি না, নিজেকে সেভ করার জন্য এমন বলতে পারে টিটিই: রেলমন্ত্রী

|

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ফাইল ছবি।

বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণ করা সেই ৩ যাত্রী তার আত্মীয় কিনা তা জানেন না রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তার দাবি, আত্মীয়দের হেনস্তা করার জন্য নয়, বরং অসদাচারণের কারণেই ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষককে (টিটিই) জরিমানা করা হয়েছে। নিজেকে ‘সেভ’ করার জন্য এমনটি বলে থাকতে পারেন সেই টিটিই।

শনিবার বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এমন দাবি করেছেন তিনি। এর আগে, শুক্রবার রাতে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ, জরিমানা করায় বরখাস্ত হলেন টিটিই এমন সংবাদ প্রকাশিত হয় যমুনা অনলাইনসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রেলমন্ত্রীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

বিবিসি বাংলাকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, টিটিই’র বরখাস্ত হওয়ার সাথে আত্মীয় পরিচয়দানের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি এখন পর্যন্ত জানি না এরা কারা। আমার কাছে কোন ইনফরমেশন নাই এরা কারা। ফলে কেউ পরিচয় দিয়েছে কী দেয়নি সেটা আমি জানি না।

মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ রেলওয়েতে খোঁজ নিয়ে তিনি জেনেছেন বরখাস্ত হওয়া টিটিইর বিরুদ্ধে যাত্রীর সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করা হয়েছে এমন লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকেটে ভ্রমণ করা কাউকে জরিমানা করার অপরাধে কাউকে ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছে, বিষয়টি তেমন নয়। এখন হতে পারে টিটিইর যে অপরাধ সেটা থেকে সে নিজেকে সেভ করার জন্য এটা বলতেছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী রেল জংশন থেকে বিনা টিকিটে এসি কেবিনে চেপে বসেন তিন যাত্রী। টিকিট না থাকায় তাদের জরিমানা করেছিলেন টিটিই শফিকুল ইসলাম। সেই ৩ যাত্রী নিজেদের রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। টিটিই বিষয়টি পাকশী বিভাগীয় রেলের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (এসিও) নুরুল আলমের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি সর্বনিম্ন ভাড়া নিয়ে টিকিট কাটার পরামর্শ দেন ওই তিন যাত্রীকে। পরে তাদের জরিমানাসহ সুলভ শ্রেণির টিকিট কাটতে হয়।

ওইদিনই বিকেলে ঈশ্বরদীর পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের নির্দেশে টিটিই শফিকুল ইসলামকে ফোনকলে চাকরি থেকে বরখাস্তের আদেশ জানানো হয়। টিটিই শফিকুল ইসলাম ট্রেনে ডিউটিরত অবস্থায়ই বরখাস্তের আদেশটি ফোনে জানতে পারেন। শুক্রবার (৬ মে) থেকে এ আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। এত দ্রুততম সময়ে সরকারি কর্মচারীকে শাস্তির আওতায় আনার উদাহরণ খুব বেশি দেখা যায় না।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply