চাঁদপুরে আজও উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চাঁদপুর:

বিশ্বের যে কোনো স্থানে চাঁদ দেখা যাওয়ার ভিত্তিতে চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে আজ সোমবারও ঈদ উল ফিতর পালিত হচ্ছে। দেশে আগাম ঈদের প্রবক্তা হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফ সংলগ্ন সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে সকাল ১০টায় ঈদের জামাতের ইমামতি করেন সাদ্রা দরবারের পীর মাওলানা আরিফ বিল্লাহ চৌধুরী। এর আগে গতকাল রোববার নাইজেরিয়া আর আফগানিস্তানে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ পালন করে একই দরবারের আরেক পক্ষ।

হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফের মরহুম পীর আল্লামা মোহাম্মদ ইসহাক চৌধুরীর অনুসারীগণ ৯৪ বছর আগে সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছেন।

মাওলানা আরিফ বিল্লাহ চৌধুরী জানান, চাঁদ দেখার ভিত্তিতে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি। রোববার মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখা গেছে। তাই মুসলিম বিশ্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ৩০ রোজা শেষ করে আমরাও তাদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছি।

এদিকে গতকাল রোববার সাদ্রা দরবার শরীফের একাংশ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। প্রথম চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে এবং ভোররাতে ঘোষণা দিয়ে রোববার হাজীগঞ্জের সাদ্রা হামীদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা মাঠে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ঈদের জামাতে ইমামতি করেন সাদ্রার মরহুম পীরের ছেলে মুফতি জাকারিয়া আল মাদানী। তিনি বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আফ্রিকার দেশ নাইজার, মালি ও এশিয়ার দেশ আফগানিস্তানে চাঁদ দেখার খবর পাই। এরপর তা যাচাই-বাছাই করে ভোররাতে আমরা ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছি ও ঈদ পালন করেছি। তিনি আরও বলেন, সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে নয়, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে কোরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা ঈদ উদযাপন করে থাকি। যার ফলে সর্বপ্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা রাখি এবং ঈদ উদযাপন করি।

এদিকে রোববার ও সোমবার দুই দিন ঈদ পালনের কারনে স্থানীয় আগাম ঈদ উদযাপনকারীদের নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে প্রতি বছর চাঁদপুর জেলার তিনটি উপজেলার ৪০ গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়ে আসছে। সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা ৯৪ বছর ধরেই প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সাদ্রাসহ চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে ঈদ উদযাপন করে থাকেন।

সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আল্লামা মোহাম্মদ ইসহাক ইংরেজি ১৯২৮ সাল থেকে প্রথম চাঁদ দেখার ওপর মিল রেখে ইসলামের সব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন। মাওলানা ইছহাকের মৃত্যুর পর থেকে তার ৬ ছেলে এ মতবাদের প্রচার চালিয়ে আসছেন।

সাদ্রাসহ ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলো হলো হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, দক্ষিণ বলাখাল, শ্রীনারায়ণপুর, মনিহার, বড়কুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর। ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply