বিজয় ভাষণে কি ফ্রান্সকে মেরুকরণের দিকে ঠেলে দিলেন ম্যাকরন?

|

ছবি: সংগৃহীত

ফ্রান্সকে নতুন মেরুকরণের দিকে ঠেলে দিলেন কিনা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন, তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন। বিজয় ভাষণে দেয়া স্বীকারোক্তিতে ম্যাকরন বলেছেন, প্রাপ্ত ভোটের সবাই তার সমর্থক নন। বরং, কট্টর ডানপন্থী শাসন এড়াতেই বহু ফরাসি তাকে ভোট দিয়েছেন। তাই ম্যাকরনের কণ্ঠে ঐক্যবদ্ধ ফ্রান্স গড়ে তোলার প্রত্যয়। এদিকে, ল্যু পেনের নজর পার্লামেন্টে নিবদ্ধ। পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধান না করে, দ্বিগুণ শক্তিমত্তা নিয়ে লড়তে চান জাতীয় পরিষদে। খবর সিএনবিসির।

খাতা-কলমে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছেন ম্যাকরন, তাতে কোনো সন্দেহ নাই। ফ্রান্সের রাজনীতিতে দু’দশক পর টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসলেন কোনো প্রেসিডেন্ট। তাছাড়া, স্বরাষ্ট্র-পররাষ্ট্র ইস্যু মোকাবেলায়ও ইমানুয়েল ম্যাকরনের প্রতি রয়েছে জনতার আস্থা। তার ওপর, ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযান শাপেবর হয়েছে ম্যাকরনের জন্য। রাশিয়ার ওপর অবরোধ দেয়ার ঘোরবিরোধী মেরি ল্যু পেন। কারণ, রুশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েই ডানপন্থী এই প্রার্থী চালিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারণা। যাকে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছেন ম্যাকরন।

অবশ্য, চূড়ান্ত ফলাফলে তিনি কিছুটা নিরাশ। গেলবারের তুলনায় কমে এসেছে ভোটের ব্যবধান। জরিপ বলছে, জয় পেলেও ভোটাররা সবাই তার সমর্থক নন। সেই বিভাজন দূর করার প্রত্যয় ছিল ম্যাকরনের বিজয় ভাষণে। তিনি বলেন, বহু ফরাসি এই নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থীদের বেছে নিয়েছেন। ক্ষোভ আর ভেদাভেদ থেকেই তাদের এ সিদ্ধান্ত। তবে আবারও মানবিকতা, প্রজাতন্ত্রের মতাদর্শ আর গণতন্ত্রের জয় হলো। যারা পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেখতে চান; চান কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাক, মুক্ত হোক সাংস্কৃতিক চর্চা, তারাই আমাকে ভোট দিয়েছেন। শপথ নিচ্ছি, দেশ ও জনকল্যাণে আগামী ৫ বছর কাজ করবো।

অবশ্য- পরাজয়ের খতিয়ান নিয়ে বসতে রাজি নন প্রতিদ্বন্দ্বী ল্যু পেন। বরং, তিনি মনোযোগ দিচ্ছেন আসন্ন পার্লামেন্ট ও স্থানীয় নির্বাচনের দিকে। মেরি ল্যু পেন বলেন, আমরা লড়াই করে পরাজিত হয়েছি। নির্বাচনী যুদ্ধে সবচেয়ে বড় সমর্থন যুগিয়েছে আমার দল ন্যাশনাল র‍্যালি। যারা মন থেকে ফ্রান্সকে ধারণ করেন এবং ম্যাকরন বিরোধী, তারাই দিয়েছেন আমাকে ভোট। বলবো, মনোবল ভাঙবেন না। বরং, জুন মাসে পৌরসভা আর পার্লামেন্টের প্রতিনিধি নির্বাচনে দেখিয়ে দিন ডানপন্থীদের শক্তিমত্তা।

রানঅফ বা দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ৭২ শতাংশের কম ছিল ভোটার উপস্থিতি; যা ১৯৬৯ সালের পর সর্বনিম্ন। নতুন ভোটারদের বেশিরভাগই প্রয়োগ করেননি ভোটাধিকার; বক্সে ফেলেছেন ফাঁকা ব্যালট। আর এ সংখ্যা ৩০ লাখেরও বেশি। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, কোনো প্রার্থীই জনপ্রতিনিধিত্ব করেন না।

আরও পড়ুন: ‘ভেদাভেদ রয়ে গেছে বলেই দেশবাসী কট্টর ডানপন্থীদেরও ভোট দিয়েছে’

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply