ওটিটি খসড়া নীতিমালা: বিশ্লেষকদের মত, অনেক কিছুই সুনির্দিষ্ট করা হয়নি

|

মন খারাপের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সত্যিই কি লেখা বা বলা যাবে না? বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ওটিটির যে বিধানের খসড়া প্রকাশ হয়েছে, তাতে বাক স্বাধীনতা হরণ হয় এ রকম কিছু নেই। তবে সাইবার আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিধানটিতে অনেক কিছুই সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। এভাবে চূড়ান্ত হলে, ক্ষমতাবানরা চাইলেই আইনের অপপ্রয়োগ করতে পারবে। অবশ্য ব্যবহারকারীরা সাইবার নিরাপত্তার পাশাপাশি চান স্বাধীনতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন বলেন, আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম, মন খারাপ। এতে কেউ একজন মামলা করে দিল, আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষূণ্ন হয়েছে বলে। কারণ, এত সুখের একটা দেশে কেন মন খারাপ হবে? আমাদের আইনগুলো এখন এ রকম হয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রচার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন সেলিম মনে করছেন, তরুণ প্রজন্মের স্বার্থে অনেক কনটেন্ট প্রকাশ করতে হবে। সেটা হতে পারে সচেতনতামূলক কনটেন্ট। কিন্তু এক্ষেত্রে এই আইন বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

অভিনেতা ও নির্মাতা তারিক আনাম খান বলেন, খুব সঠিকভাবে চলছে, এ রকম একটা ধারণা নিয়ে করা। তাহলে তো শিল্পকর্ম হবে না। নাট্য হবে না, তাহলে ফিকশন হবে না। ফিকশন আউট অব দ্য কনটেক্স নিয়ে কিছু প্রশ্ন করে। অনেক সময় সেটা সমাজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে।

তবে বিটিআরসি বলছে, ইউটিউব, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাক্তি আক্রমণ, গুজব ও অপপ্রচার রোধে উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিধানটি করা হচ্ছে।

শ্যাম সুন্দর সিকদার প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনাকে নিয়ে যদি মানহানিকর কোনো কনটেন্ট প্রকাশ করা হয়, তাহলে আপনি কী চাইবেন না আইনগত ব্যবস্থা নিতে? আপনার কি সে অধিকার নেই? অপপ্রয়োগের বিষয়টা এখানে সেভাবে নেই। কারণ আমাদের মূল টার্গেট হলো সোশ্যাল মিডিয়া অথরিটি। তাদেরকে আমরা এটা দিয়ে নিভৃত করবো। আমরা এগুলো আপলোড করতে দিই না। কারা আপলোড করছে, তাদের তথ্যগুলো আমাদের দিতে হবে।

উদ্দেশ্য ভালো হলেও অপরাধ সুনির্দিষ্ট না হওয়ায় বিটিআরসির প্রবিধানে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ বিশ্লেষকদের।

তারিক আনাম খান বলেন, চিন্তার স্বাধীনতাকে কিছুটা হলেও করতে দিতে হবে। অন্যদিকে শ্যাম সুন্দর সিকদার জানান, আইনের খসড়া ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছে এবং ৩ মাস পরপর তাদের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে। এ আইনের মাধ্যমে সরাসরি প্যানেল অ্যাকশনে যাওয়ার সুযোগ খুব একটা থাকবে না।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী মে মাসে রেগুলেশনের খসড়া জমা দেয়া হবে উচ্চ আদালতে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply