বাংলা ভাষায় ব্লকচেইন নিয়ে বই

|

ছবি: সংগৃহীত

ব্লকচেইন হচ্ছে ব্লক দিয়ে তৈরি চেইন বা ব্লকের চেইন। যে ব্লকগুলোর দ্বারা এই চেইনটি তৈরি করা হয় সেই ব্লকগুলো মূলত তথ্য সংরক্ষণ করে। ব্লকচেইন মূলত একটি পিটুপি নেটওয়ার্ক তৈরি করে যেখানে ব্লকচেইনের প্রত্যেকটি ব্লকের ডেটা ইন্টারনেটে কানেক্টেড থাকা যেকোনো ব্যক্তি যাচাই করতে করতে পারে। মূলত ব্লকচেইন হচ্ছে একটি ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার, যেটি সকলের জন্য উন্মুক্ত।

ক্রিপ্টোগ্রাফিক টেকনোলজি ব্যবহার করে ব্লকচেইন নিয়ে সর্বপ্রথম কাজ করা হয় ১৯৯১ সালের দিকে, যদিও তা সফলতার মুখ দেখতে না পাওয়ার ফলে তার ব্যবহার বিস্তার লাভ করতে পারেনি। এর প্রকৃত ব্যবহারকে কাজে লাগান ২০০৮ সালে সাতোশি নাকামোতো নামে এক পরিচয় বিহীন ব্যক্তি। তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সি তথা বিটকয়েনের লেনদেনের জন্য ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেন । বর্তমানে এই প্রযুক্তির ফলে ব্লকচেইনের ব্যবহার সম্পর্কে আজ বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বাড়ছে।

এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে বাংলা ভাষায় খুব বেশি বই নেই। মোস্তফা তানিমের লেখা ‘বিটকয়েন: ব্লকচেইন প্রযুক্তি ও অন্যান্য মুদ্রা’র পর চলতি অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পাওয়া যাচ্ছে তরুণ লেখক তানিম সুফিয়ানীর বই ‘ব্লকচেইন: আগামীর প্রযুক্তি’। প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা থেকে বের হওয়া বইটি পাওয়া যাচ্ছে রকমারি ডট কমেও।

অনেকেই ব্লকচেইনকে ক্রিপ্টোকারেন্সি কিংবা ডিজিটাল মুদ্রার সমার্থক মনে করেন, কিন্তু বাস্তবে তা নয়। ব্লকচেইন ডিজিটাল মুদ্রার পেছনের প্রযুক্তি কিংবা ভিত্তিপ্রস্তর। তবে ব্লকচেইন দিয়ে শুধু ডিজিটাল মুদ্রা নয়, আরও অনেক কিছুই করা সম্ভব। সম্ভাবনা আসলেই সীমাহীন। বলা যেতে পারে, ডিজিটাল মুদ্রা কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সি যদি হয় এক প্রজাতির মাছ, তবে ব্লকচেইন প্রযুক্তি সম্পূর্ণ মহাসাগর।

অর্থনীতিবিদ ক্লাউস শোয়াব থেকে শুরু করে অনেক মনীষীর মতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বিপ্লব এখন তার বাল্যবস্থায় আছে। এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস, ন্যানো টেকনোলজি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, থ্রিডি প্রিন্টিং, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্টারনেট অব থিংজ, ব্লকচেইন ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে এক নতুন বিশ্বের গঠন হবে। অদূর ভবিষ্যতেই ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যাংকিং, বীমা, উৎপাদন, সাপ্লাই চেইন, লজিস্টিকস, ডিজিটাল আইডি, জন্ম ও পাসপোর্ট নিবন্ধন, ডাটা শেয়ারিং, শিল্প, বিনোদন, ক্রীড়া, রিয়েল এস্টেট, স্বাস্থ্যখাত, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষিখাত, দাতব্যখাত, ঔষধ শিল্প, মানবাধিকার সহ আরও অনেক খাতে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখতে চলেছে। শুধু তাই নয়, এই ব্লকচেইন প্রযুক্তিই গড়তে পারে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত এবং বৈষম্যহীন এক পৃথিবী।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply