পিঁপড়া খেলে সত্যিই কি আয়ু বাড়ে?

|

ছবি: সংগৃহীত

গত বছর ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় লাল পিঁপড়ার চাটনি খুব আলোচিত বিষয় ছিল। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচুর শেয়ার হয়েছিল সেই রেসিপি। তারপর বলা হলো, এই চাটনি কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় কার্যকর। পিঁপড়ার মতো প্রাণীকে খাবার হিসেবে ব্যবহার করাটা অনেকে খুব অদ্ভুত বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু ভারতের ছত্তিশগড়ের আদিবাসী এলাকায় পিঁপড়ার চাটনি বেশ জনপ্রিয়।

নিউজ এইটিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বস্তার জেলায় ২৩ বছর বয়সী এক যুবক তার খাবার হোটেলে পিঁপড়ার চাটনি দেয়া শুরু করেছিলেন। আর এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনা হয়েছে। পৃথিবীর অনেক জায়গায় পিঁপড়া মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এমন নয় যে শুধু ভারতের ছত্তিশগড়েই পিঁপড়াকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়! দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়াতেও মানুষ পিঁপড়া শিকার করে খায়। হরমিগাস কুলোনাস প্রজাতির পিঁপড়া বা বিগ বাট কলম্বিয়ার উত্তর মধ্য স্যান্টান্ডার অঞ্চলে শিকার করা হয়। এই প্রজাতির পিঁপড়া বসন্তে বংশবৃদ্ধি করে। তাদের রানি পিঁপড়া ধরা পড়লে তা দিয়ে সুস্বাদু খাদ্য তৈরি হয়।

কলম্বিয়ায় মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারি বৃষ্টিপাতের পর পিঁপড়ের প্রজনন মওসুম আসে। তখন তারা অনেক ডিম দেয়। কথিত আছে, এগুলো লবণ দিয়ে ভাজা হলে সেগুলোর স্বাদ চিনাবাদাম বা পপকর্নের মতো হয়। এখানে এই মওসুমে পিঁপড়া খুব ধুমধাম করে খাওয়া হয় এবং তাদের দাম কলম্বিয়ান কফিকেও ছাড়িয়ে যায়। সেই সময় পিঁপড়া আয়ের একটি ভালো উৎস।

শুধু কলম্বিয়াতেই নয়, মেক্সিকোতেও এই ধরনের পিঁপড়া খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। মেক্সিকোতে উড়ন্ত পিঁপড়া বিশেষ করে বর্ষাকালে ধরা হয় এবং ভাজা খাওয়া হয়। বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহৃত হয় পিঁপড়া। অনেক লোক পিঁপড়াকে পিজা বা টপিংসের জন্য মশলা হিসাবে ব্যবহার করে। সেখানে এটি একটি খুব প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়।

ব্রাজিলে রানি পিঁপড়া প্রচুর খাওয়া হয়। পিঁপড়া ভেজে বা চকলেটে ডুবিয়ে আনন্দের সাথে খাওয়া হয়। এক সময় এখানকার গরীবদের খাবার ছিল পিঁপড়া। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি এখন ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী খাবারের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে।

আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডও পিঁপড়া খাওয়া হয়। বেশিরভাগ সময় পিঁপড়া অন্য পোকামাকড়ের সাথে খাওয়া হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে লাওস এবং উত্তর-পূর্ব থাইল্যান্ডে পিঁপড়ার ডিম খাওয়া হয়। সেখানে পিঁপড়ার ডিম প্রোটিনের একটি উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়।

বিশ্বের অনেক দেশেই পিঁপড়াকে অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে দেখা হয়। পূর্ব এশিয়া এবং মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার নাম বলতেই হয়। তাই অনেক জায়গায় পিঁপড়া খাওয়া মানুষও দীর্ঘজীবী বলে মনে করা হয়। গবেষণায় আরও জানা গেছে, পিঁপড়ার কিছু প্রজাতি কোলেস্টেরল কমাতে এবং ক্যান্সারের ওষুধ হিসাবে কাজ করে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply