কেন শীর্ষ মাদক উৎপাদনকারীতে পরিণত হচ্ছে মিয়ানমার?

|

রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক সংকট অন্যতম শীর্ষ মাদক উৎপাদনকারী দেশে পরিণত করেছে মিয়ানমারকে। যেখানে প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে কয়েক টন মেথামফেটামাইন পিল বা ইয়াবা। প্রতিবেশি থাইল্যান্ড হয়ে ভয়ংকর এ মাদক ছড়িয়ে পড়ছে এশিয়ায়। সাগরপথে চলে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপানের মতো উন্নত দেশেও।

এই বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করা হয় কুখ্যাত গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের অন্যতম দেশ মিয়ানমারে। মাদক বাণিজ্য বলতেই লাতিন দেশ মেক্সিকোর নাম উঠে আসলেও, গেল কয়েক বছরে মাদকের অন্যতম আখড়া হয়ে উঠেছে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। যার মূল কেন্দ্র মিয়ানমার।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আর অর্থনৈতিক দুরবস্থার সুযোগে বিভিন্ন দেশের অপরাধী চক্র রীতিমতো কারখানা খুলে বসেছে মিয়ানমারে। লাভজনক বলে দারিদ্র পীড়িত নাগরিকরা বেছে নিচ্ছে অবৈধ আয়ের পথ।

পপি উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ মিয়ানমার। যেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় শস্যের বীজ বা অন্যান্য কৃষি উপকরণের চাইতে সস্তা ও সহজলভ্য পপি ফুলের বীজ। তাই প্রান্তিক অঞ্চলের চাষীরা ঝুঁকছেন আফিম চাষের দিকে।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত বিভাগ, ইউএনওডিসি বলছে, মিয়ানমার ও লাওসে ৭২ ভাগ কৃষকই জড়িত পপি চাষে।

কিন্তু গত কয়েক বছরে সিনথেটিক ড্রাগেরও কেন্দ্র হয়ে উঠেছে মিয়ানমার। বিশেষ করে রাসায়নিক উপাদানে তৈরি ইয়াবার দাপটে চাহিদা কমেছে হেরোইনের মতো মাদকের। চীন-ভারতকে পাশ কাটিয়ে ইয়াবা তৈরির রাসায়নিকও উৎপাদিত হচ্ছে দেশটিতেই। কাঁচামালের জন্যও এখন আর চীন বা ভারতের ওপর নির্ভর করতে হয় না।

পূর্ব এশিয়ার গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল হিসেবে কুখ্যাত মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ডসহ গোটা অঞ্চলেই বেড়েছে ইয়াবা বাণিজ্য। বিস্তার ঠেকাতে সম্প্রতি মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে এশিয়ার অনেক দেশই। গত এক দশকে এ অঞ্চলে ইয়াবা জব্দের পরিমাণ বেড়েছে ১১ গুণ। কেবল ২০১৯ সালে এ অঞ্চলে জব্দ হয়েছে ১৪১ টন ইয়াবার চালান।

এরপরও অবশ্য নিয়ন্ত্রণহীন মাদকের বাজার। জাতিসংঘের মতে, অনেক সময়ই মাদক ব্যবসার কালো টাকা চলে যায় সিঙ্গাপুর, হংকং কিংবা ম্যাকাওর ক্যাসিনোতে।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply