সকালে হাঁটার নিয়ম ও উপকারিতা

|

ছবি: সংগৃহীত।

সকালে হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। নিয়মিত সকালে হাঁটলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। দৈনন্দিন শারীরিক কার্যক্রম না হওয়ার ফলে শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন অসুখ। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, আথ্র্রাইটিস, ওবেসিটি বা স্থুলতা, মাংসপেশির শক্তি কমে যাওয়া, অষ্ঠিওপোরোসিস বা হাড়ের ভঙ্গুরতা ইত্যাদি।

আসুন জেনে নেই সকালে হাঁটা যেসব রোগের ঝুঁকি কমায়।

শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে

নিয়মিত হাঁটলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে। ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়ে, মন্দ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমে।

ওজন কমিয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়

নিয়মিত হাঁটলে ওজন কমার কারণে স্তন ক্যানসারসহ অন্য অনেক ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও হাঁটা বেশ কার্যকর। হাঁটলে শরীরের পেশিতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে। ফলে রক্তের গ্লুকোজ কমে।

উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি

উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন সকালে হাঁটুন। ব্লক থাকলেও নিয়মিত হাঁটার কারণে আশপাশের ছোট রক্তনালিতে রক্ত সরবরাহ বাড়ে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। কমে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও।

হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা

হাঁটার সময় হৃৎস্পন্দন আর শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বাড়ে। ফলে হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসে রক্ত সরবরাহ বাড়ে।

হাড় ও গিঁটের জন্য ভালো

যারা নিয়মিত হাঁটেন, তাদের অস্টিওপোরোসিস কম হয়। হাড়ের জোড়া বা গিঁট সুস্থ থাকে। হাঁটার উপকার পেতে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটুন।

তবে শুধু হাঁটলেই হবে না। হাঁটার জন্য কিছু নিয়ম আছে। সেসব নিয়ম না মেনে হাঁটলে কষ্টটাই বৃথা যাবে। তো আসুন জেনে নেয়া যাক সকালে হাঁটার কিছু নিয়ম-

হাঁটার আগে কি করবেন

প্রতিদিন হাঁটতে যাওয়ার আগে লক্ষ্য রাখুন আপনার পোশাকটি যথেষ্ট আরামদায়ক এবং হাঁটার উপযোগী কিনা। হাঁটার আগে একটু ঢিলেঢালা পোশাক পরে নিন। হাঁটার জন্য আরামদায়ক জুতো কিনে নিন। সাথে অবশ্যই খাবার পানি রাখুন। প্রতি ১৫ মিনিট পর পর পানি খান অল্প করে। তাহলে সকালের হাঁটার অভ্যাসটা উপভোগ্য হয়।

কতক্ষণ হাঁটবেন

প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ মিনিট হাঁটতে হবে। এতে করে রোগবালাই প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। সপ্তাহে ৪/৫ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটলেই আপনার শরীরের অনেক উন্নতি হবে। আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

কখন হাঁটবেন

হাঁটার ভালো সময় ভোর বেলা। এসময় কোলাহল কম থাকে, পরিবেশ তুলনামূলকভাবে কম দূষিত থাকে। তাই এসময়ের নির্মল বাতাসে হাঁটা শরীরের জন্য বেশি ভালো।

তবে চাইলে সুবিধামত সময়ে হাঁটা যায়। শরীরের কথা চিন্তা করলে বিকেলে হাঁটা সবচেয়ে ভালো। কারণ তখন পেশী নমনীয় থাকে। শরীরের তাপমাত্রা সকালের চাইতে বেশি থাকে। তখন সব কাজ শেষ করে টেনশন মুক্ত হয়ে হাঁটা যায়। কিন্তু সকালে হাঁটলে মাসেল ও জোড়া শক্ত হয়ে থাকে। আবার শরীরও ওয়ার্ম আপ হতে সময় বেশি লাগে। সে কথা চিন্তা করলে বিকেলে হাঁটা উত্তম। কিন্তু বিকেলে পরিবেশ দূষণ বেশি থাকে এটাও সমস্যা। সকালে দূষণ মুক্ত পরিবেশে হাঁটা যায়। তবে আপনি যখনি সময় পান সুবিধা মতো সময়ে হেটে নিবেন। চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একই সময়ে হাঁটতে।

কোথায় হাঁটবেন?

সুন্দর, দূষণমুক্ত পরিবেশে হাঁটা উচিৎ। হাঁটার জায়গা যেন সমতল ও পরিষ্কার হয় তা লক্ষ্য রাখুন। বাড়ির বাগান, পার্কে, পরিষ্কার ফুটপাতে বা যেকোনো খোলা জায়গায় হাঁটতে পারেন। মাঝে মাঝে হাঁটার রাস্তা বা জায়গা বদল করুন। এতে একঘেয়েমি কাঁটবে, ভালো লাগবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply