পাবনায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে হাজার লোকের ভুরিভোজের আয়োজন

|

খাবার প্যান্ডেল। ছবিটি সকালে তোলা। ক্যাডাররা বাধা দেয়ায় খাবারের ছবি তোলা যায়নি। ইনসেটে চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুন নবী মন্ডল।

পাবনা প্রতিনিধি:

নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। এরই মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১৪ জন। এ অবস্থায়ই শক্তির জানান দিতে সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুন নবী মন্ডলের পক্ষ থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের শতাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সহস্রাধিক লোকের ভুরিভোজের আয়োজন করা হয়।

তবে, চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুন নবী এ খাবারের আয়োজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বলে দাবি করেছেন। এদিকে ভুরিভোজের আয়োজনের ছবি তুলতে গেলে বাধা এবং পেটানোর হুমকি দেয় নুরুন নবীর ক্যাডার বাহিনী।

জানা যায়, আগামী ২৬ ডিসেম্বর খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নুরুন নবী মন্ডল, মনোয়ার খান মিঠু (বিদ্রোহী প্রার্থী) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন শরিফুল ইসলাম। তবে প্রচারণা চালাচ্ছেন শুধু নুরুন্নবী মন্ডল ও মনোয়ার খান। প্রচারণার শুরু থেকেই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
.

এরই মধ্যে গত শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) কয়েক দফা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হয়। এ সময় দুই প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ও বেশকিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরে দুই প্রার্থীর কয়েক শতাধিক সমর্থক লাঠিসোটা নিয়ে হামলার প্রস্ততি নিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনা হয়।

এ অবস্থায় গত রোববার (১২ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুন নবী মন্ডল আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মোটরসাইকেল যোগে শতাধিক সমর্থক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মনোয়ার খান মিঠুর এলাকায় প্রচারণা চালাতে যান। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নুরুন নবী মন্ডলকে আট হাজার টাকা জরিমানা করেন।

কিন্তু, এরপরও শক্তির অবস্থান জানান দিতে নুরুন নবী মন্ডলের পক্ষে আবারও সোমবার সহস্রাধিক লোকের ভুরিভোজের আয়োজন করা হয়। জানা গেছে, এ আয়োজনে প্রায় ১২ মণ চাল ও ৫ মণ গরুর মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্না করা হয়। ভুরি ভোজের আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের শতাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

এ আয়োজনে উপস্থিত উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি খাবার পাঠানো হয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কাছেও।

রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের ময়দানদিঘী গ্রামে নুরুন নবী মন্ডলের বাড়ির উঠানে রান্না চলছে। আর খাবার খাওয়ার প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে ময়দানদিঘী বাজার ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে। এ সময় রান্না ও প্যান্ডেলের ছবি তুলতে গেলে নুরুন নবী মন্ডলের ক্যাডাররা ছবি তুলতে বাধা দেন। এবং দ্রুত সে স্থান ত্যাগ না করলে সাংবাদিকদের পেটানোর হুমকি দেন।


এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুন নবী মন্ডল বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের আগমন উপলক্ষে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ৬০০ মানুষের খাবারের আয়োজন করেছে। এ খাবারের আয়োজনের সাথে আমি নেই। কর্মী-সমর্থকরা এ কাজ করেছে।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান এ ব্যাপারে বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply