আবরার হত্যা: ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন

|

নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বী।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। এছাড়াও বাকি ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ২২ আসামিকে আদালতে নেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড দেয়া ২০ আসামিরা হচ্ছে, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মাজেদুর রহমান মাজেদ, সদস্য মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, শাদাত হোসেন, সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মিজানুর রহমান মিজান, মাহামুদ সেতু, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম। এছাড়াও তিন পলাতক আসামি এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মাহমুদুল জিসান, মুজতবা রাফিদকেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আকাশ হোসেন, মোয়াজ আবু হোরায়রা, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ

রায়ে আদালত বলেন, সকল আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে শিবির সন্দেহে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করায় ২৫ জনকে সর্বোচ্চ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া।

এর আগে মামলার ৬০ সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় ৪ মার্চ। ২৫ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ২২ জনের অনেকেই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে সাফাই সাক্ষ্য দেয়। পলাতক থাকায় ৩ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পায়নি। চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।

উল্লেখ্য, বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন ২০১৯ সালে ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় আবরারকে। ৭ই অক্টোবর ভোররাতে আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে। দেশের অন্যতম এই বিদ্যাপীঠে একজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। এরপর এই ঘটনার সাথে যুক্ত অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মাঠে নামে সারা দেশের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। আবরার হত্যার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পরে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বুয়েট।

আরও পড়ুন: ডা. মুরাদের আপত্তিকর বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক শনাক্ত

২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২১ জানুয়ারি তা আমলে নেয় আদালত। ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে গঠন হয় অভিযোগ। তবে করোনার কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থা, রাষ্ট্রপক্ষের ভুলে পুনরায় অভিযোগ গঠন আর বিচারকের প্রতি আসামিপক্ষের অনাস্থার মতো কারণে বিচার বিলম্বিত হয়েছে বারবার।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply