আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’: ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কায় উপকূলবাসী

|

জাওয়াদের আগমনে সাতক্ষীরার বেড়িবাঁধগুলোর স্থায়ীত্ব নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় এলাকাবাসী।

নিজস্ব প্রতিনিধি:

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এর প্রভাবে সাতক্ষীরার নদ-নদীতে জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে জেলা জুড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়, আকাশ ছিলো মেঘলা। হঠাৎ বৃষ্টিতে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। তবে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে আবারও বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা।

সাতক্ষীরার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চাঁদনিমুখা গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, শনিবার দুপুর থেকে আমাদের এলাকায় থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকে আকাশে মেঘ রয়েছে। তবে ঘুর্ণিঝড়ের সতর্কতা সংকেত না বাড়ায় এখন পর্যন্ত কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি। আমাদের ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া, পাশ্বেমারি, সোরা, দৃষ্টিনন্দন, পাতাখালী এলাকায় কয়েক কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ রয়েছে। জোয়ারের পানির চাপ বাড়লে বেড়িবাঁধ ভেঙে যেতে পারে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ইতোমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে জোয়ারে যে পরিমাণ পানি বাড়ছে, তাতে এসব বেড়িবাঁধে ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তারপরও আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব এলাকায় খোঁজ খবর রাখছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম প্রস্তুতির বিষয়ে গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম থাকায় এখনও বাড়তি কোনো প্রস্তুতি নেয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া আমাদের সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিং ও উদ্ধার কাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারি বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সাইক্লোন শেল্টার ও আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। শনিবার জেলা দুর্যোগ মোকাবেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সতর্ক সংকেত বাড়লে আমরা উপজেলায় জরুরি সভা করব।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, রোববার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে। একই সাথে শীতের তীব্রতাও বাড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নেই। ঘুর্ণিঝড়টি রোববার রাতে ভারতের ওড়িষ্যা উপকূল দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা আছে। তিনি আরও বলেন, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের উত্তরে ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply