ফরিদপুরে সংবাদ সম্মেলনে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যার আকুতি

|

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার সম্পত্তি থেকে মেয়েকে বঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ করেছেন শহরের কমলাপুর মহল্লার এলাকার বাসিন্দা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এম আব্দুল আলী এর মেয়ে নাজমা আক্তার (৬৭)। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এম আব্দুল আলী ১৯৭১ সালে রাঙ্গামাটি মাহকুমায় মহাকুমা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ওই বছর ২৬ এপ্রিল তিনি পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে বন্দি হয়। ১২ দিন আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে এম আব্দুল আলীকে হত্যা করে পাকিস্তানী বাহিনী। নাজমা আক্তার ফরিদপুর শহরের মধ্য আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত কবিরুল ইসলাম ওরফে কাঞ্চনের স্ত্রী। তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। ফরিদপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ছোটভাই আ ত ম আনোয়ারুল ইসলাম রঞ্জুর বিরুদ্ধে পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেন তিনি। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাজমা আক্তার অভিযোগ করেন, শহরের কমলাপুর মহল্লায় তার বাবার এক একর ৬২ শতাংশ জমি রয়েছে। তারা দুই ভাই ও তিন বোন। সে হিসেবে তার পিতার সম্পত্তি থেকে ২৩ শতাংশ জমি পাওয়ার কথা। গত ১০ নভেম্বরে তিনি ও তার আরেক বোন পৈত্রিক ওই জমি থেকে ৪৬ শতাংশ জমি হায়দার আলী, মোশাররফ হাওলাদার, আজিজুল ইসলাম মৃধা ও খায়রুজ্জামানের নিকট বিক্রি করেন। গত ২২ নভেম্বর ওই জমি বুঝিয়ে দিতে গেলে তার ভাই আনোয়ারুল ইসলাম পুলিশ এনে বাধা দেন। পরে এ ব্যাপারে গত ২ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় সালিশ বৈঠকের দিন ও সময় ঠিক করা হয়।

গত ২ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ে নাজমা আক্তারসহ জমির ক্রেতারা উপস্থিত থাকলেও আনোয়ারুল উপস্থিত হননি। নাজমা আক্তার বলেন, সালিশে তার ছোট ভাই উপস্থিত না হলেও তাকে ও জমির ক্রেতাদের বিভিন্নভাবে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছেন। সংবাদ সম্মেলনে আকুল আবেদন জানিয়ে নাজমা আক্তার বলেন, আমি অতিশয় বৃদ্ধ, চোখে দেখতে পাইনা, হাঁটতেও পারি না। আমি লোভী নই। আমার খুব করুণ অবস্থা। সাংসারিক অনাটনের জন্য চলতে পারছিলাম না বলেই বাবার সম্পত্তির ভাগ চেয়েছিলাম। আমার ছোট ভাই আমাকে মারধর করেছে, হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমার বাবা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার স্বামী মৃত, তিনিও একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা। আমার জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায্য পাওনা জমি বুঝিয়ে পাওয়ার জন্য সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে সচেতন নাগরিক ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।

বোনের এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমা অক্তারের ছোট ভাই আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা পাঁচ ভাইবোন। বাবার সম্পত্তি কীভাবে ভাগ বন্টন হবে তা নিয়ে আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে সমঝোতা হয়নি। ফলে ফরিদপুর সদর কোর্টে ২৯৪/১৮ নম্বর দেওয়ানী মামলা রয়েছে। ওই মামলা নিস্পত্তি হওয়ার আগে ভাগ নিরুপণ করা কিংবা বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply