আবর্জনা জমা দিলেই মিলবে বই পড়ার সুযোগ!

|

ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে রাদেন রোরো।

আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কতো ধরনের কৌশলই না দেখা যায়। এবার ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির মাধ্যমে এ বার্তা দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশের এক নারী। আবর্জনা জমা দিলেই মিলবে লাইব্রেরিতে বই পড়ার সুযোগ। পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি শিশুদের পড়ার অভ্যাস তৈরির কথা মাথায় রেখে এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশের মুনতাং শহরের বাসিন্দা রাদের রোরো। তিন চাকার একটি গাড়ি ৪৮ বছর বয়সী এ নারীর প্রতিদিনকার সঙ্গী। গাড়িটির বাহ্যিক সাজসজ্জা অনেকখানিই স্পষ্ট করে, এটি একটি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি। তবে এখানে রয়েছে আরও এক চমক। আবর্জনা কুড়িয়ে জমা করলে, তবেই মেলে এই লাইব্রেরির বই। একই সাথে শিশুদের বই পড়া ও পরিবেশের বিষয়ে সচেতন করে তুলতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। ইন্টারনেটের এই যুগে শিশুদের অনলাইন গেমস থেকে দূরে রাখতেও অবদান রাখছে কার্যক্রমটি।

ট্রাস লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা রাদেন রোরো হেনডার্তি বলেন, সাহিত্যের একটা সুন্দর সংস্কৃতি গড়তে চাই। ডিজিটাল দুনিয়ার ক্ষতিকর দিক থেকে শিশুদের দূরে রাখতে চাই। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে আশপাশের আবর্জনার বিষয়েও আমাদের সতর্ক হতে হবে।

বাড়ির আশেপাশে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের বোতল কিংবা ভাঙা বস্তু কুড়িয়ে দিলেই এখানে মিলবে গল্পের বই পড়ার সুযোগ। আর বই পড়ার ঝোঁক থেকেই মুনতাং এর শিশুরা নিজের অজান্তেই অবদান রেখে যাচ্ছে পরিবেশ সুরক্ষায়। এমনই এক শিশু বলে, আশপাশে অনেক ময়লা। এটা মোটেই স্বাস্থ্যকর না। এজন্যই ময়লার কুড়িয়ে সেগুলোর বিনিময়ে বই ধার নিই।

রাদেন রোরো হেনডার্তি বলেন, আমাদের আশপাশের অনেকেই ময়লা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সতর্ক না। তারাই আমাদের টার্গেট। তবে আমাদের লক্ষ্য কেবলমাত্র একটি গ্রাম কেন্দ্রিক নয়। আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চাই। মানুষকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে চাই।

২০১৪ সালে ছোট্ট পরিসরে লাইব্রেরি কার্যক্রম শুরু করেন রোরো। অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখেও বন্ধ করেননি লাইব্রেরিটি। স্থানীয় সরকার পর্যায়ে মিলেছে স্বীকৃতিও। এ নিয়ে রাদেন রোরো বলেন, ২০১৫ সালের দিকে আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলাম। সে সময় আমাদের জিনিসপত্র কম ছিল। মানুষের লাইব্রেরিতে আসার আগ্রহও কমে গিয়েছিল। ২০১৬ সালে স্থানীয় সরকার আমাদের এই তিন চাকার গাড়ি ও কিছু বই উপহার দেয়। সে সময় থেকেই কার্যক্রমটি চালু করি।

বর্তমানে রোরো’র এই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে রয়েছে অন্তত ছয় হাজার বই। কার্যক্রমটিতে শিশুদের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছেন অনেক বয়স্কও। তাদের ক্ষেত্রেও রয়েছে আবর্জনা জমা দেয়ার এই নিয়ম।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply