ওমিক্রনের ঝুঁকি নিয়ে কেন দ্বিধায় ভুগছেন বিশেষজ্ঞরা?

|

প্রতীকী ছবি।

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ তা এখনই নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। এ জন্য পর্যাপ্ত তথ্য ও গবেষণার প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একের পর এক সতর্কতা ও নিষেধাজ্ঞার মুখে এ মন্তব্য করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। নতুন ধরনটির বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কতোটা কার্যকর তা যাচাই করার পরামর্শও দেন তিনি। এখন পর্যন্ত ১৩টি দেশে মিলেছে ওমিক্রনের উপস্থিতি।

ওমিক্রনকে কখনও উদ্বেগজনক আবার কখনও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টটির ঝুঁকির মাত্রা নিত্যে দ্বিধায় ভুগছেন বিশেষজ্ঞরা। যার কারণে, কিছুটা বিপাকেই পড়ে গেছে ওমিক্রন শনাক্তের তথ্য প্রথম জানানো দক্ষিণ আফ্রিকা। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মহাদেশটির অন্তত ১০টি দেশে।

এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অবস্থানের বিরোধিতা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ স্বাস্থ্যবিদরা। তাদের বক্তব্য, এখনও বি১১৫২৯ (B11529) ভ্যারিয়েন্টটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলার সময় আসেনি। কারণ, উপসর্গ দেখা দিলেও আক্রান্তরা খুব বেশি অসুস্থ নন।

আরও পড়ুন: ওমিক্রন: সংক্রমণ বাড়বেই, প্রতিটি দেশকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান ডব্লিউএইচও’র

কাওয়াজুলু নাটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ সালিম আবদুল করিম বলেন, ওমিক্রনের ব্যাপারে খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের তথ্য মিলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও, তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। ৩/৪ সপ্তাহের মধ্যে ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে আরও বেশি জানা যাবে। দুটি বিষয় স্পষ্ট, রোগীদের বেশিরভাগ আগেও কোনো ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। রয়েছে পূর্বের উপসর্গগুলোও।

এখনও যেহেতু সংক্রমণের ভয়াবহতা কম তাই নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখার পরামর্শ তাদের। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ সালিম আবদুল করিম বলেন, বর্তমানে আমরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, সেটি হলো চলমান ভ্যাকসিনগুলো কি নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর? এখনো বিন্দুমাত্র ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে, অতীতে টিকাগ্রহণের কারণে মৃত্যুহার এবং হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা কমতে দেখেছে বিশ্ব। সুতরাং, এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ দেখছি না।

আরও পড়ুন: ডেল্টার চেয়ে ৬ গুণ দ্রুত ছড়ায় ওমিক্রন; দাবি বিশেষজ্ঞদের

তবে, ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টিকা বণ্টনের পরিমাণ বাড়ানোর দাবিও উঠেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জো ফালাহ বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি এবং জরুরি বিভাগ প্রস্তুত রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি আমরা। কারণ, সংক্রমণ বাড়লে মানুষজন দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়বে। যারা এখনো ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি, অবনতি ঘটবে তাদের শারীরিক অবস্থার। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, যারা টিকাগ্রহণ করেছেন, এমন ব্যক্তিরাও ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন।

গত ২৪ নভেম্বর, বি১১৫২৯ (B11529) বা ওমিক্রনের তথ্য সর্বসম্মুখে আনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। জানানো হয়, নিজ থেকেই ৫০ বার রূপ বদল করেছে এই ভ্যারিয়েন্ট। স্পাইক প্রোটিন ভেঙেছে ৩২ বার। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যানুসারে, এ কারণেই অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টগুলো থেকে বেশি শক্তিশালী ওমিক্রন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply