খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হলে হুকুমের আসামি হবেন মির্জা ফখরুল: কাদের

|

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের ওবায়দুল কাদের।

খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হলে হুকুমের আসামি হবেন মির্জা ফখরুল- বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার যুবদলের এক কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘খালেদা জিয়াকে কি স্লো পয়জনিং করা হয়েছে?’ শীর্ষক মন্তব্যের জবাবে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন, বেগম জিয়াকে নাকি স্লো পয়জনিং করা হচ্ছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, খালেদা জিয়া’র পাশে থাকেন আপনারা, ফখরুল সাহেবরা। তাকে যে খাওয়ায় সেও পরিবারেরই লোক, তার আশপাশে সর্বক্ষণ ঘোরাফেরা করেন বিএনপির লোকেরাই। আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের কেউ তার পাশে থাকে না। তাকে চিকিৎসাও দিচ্ছেন তার ব্যক্তিগত পছন্দের চিকিৎসকেরাই। স্লো পয়জনিং যদি করে থাকে, তাহলে পাশের লোকেরাই করতে পারেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দণ্ড ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে আজ যে সুবিধা গ্রহণ করছেন বেগম জিয়া, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার কারণেই সম্ভব হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, হতে পারেন খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আইনের চোখে তিনি একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার বর্তমান পরিচয় সাজাপ্রাপ্ত আসামি, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের আর বলেন, আপনাদের পছন্দের লোকেরা চিকিৎসা করাচ্ছেন, এখানে আওয়ামী লীগকে জড়াচ্ছেন কেন? শেখ হাসিনা কেন হুকুমের আসামি হবেন? হুকুমের হলে ফখরুল সাহেব আপনি হবেন। বেগম জিয়াকে আপনারা মাইনাস করার জন্য স্লো পয়জনিং করছেন কি, সেই রকম কিছু করবেন বলেই কি উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে আওয়ামী লীগের ওপর, শেখ হাসিনার ওপর দোষ চাপিয়ে যাচ্ছেন?

এসময় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বেগম জিয়ার জন্য এখন এত মায়াকান্না কাঁদেন, কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করেন। তার জন্য দেখানোর মতো কার্যকর ও অর্থবহ একটা মিছিল রাজপথে করার দুঃসাহস আপনাদের ছিল না। এটা দেখাতে পারেননি। কোন মুখে তার জন্য মায়াকান্না কাঁদছেন, লজ্জা করে না। খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারের কোনো দায় নেই। কোনো কিছু হলে এর দায় বিএনপিকেই নিতে হবে। মির্জা ফখরুল সাহেবদের নিতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দেশের সংবিধান ও আইন দ্বারা দেশ পরিচালিত হচ্ছে। দেশের প্রচলিত আইন ও সাংবিধানিক নিয়মনীতির মধ্যে যতটুকু সম্ভব তার সবটুকু সুযোগ বেগম জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার মানবিক হৃদয়ের কল্যাণে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়া নিজ বাসায় থাকছেন। দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেয়ার সর্বোচ্চ সুযোগ পাচ্ছেন।’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপির নেতারা প্রধানমন্ত্রীর উদারতাকে প্রতিহিংসা বলতে দ্বিধা করছেন না। বিএনপির কৃতজ্ঞতাবোধ নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তোলে, এ দেশের রাজনীতিতে তারা প্রতিহিংসার জন্ম দিয়েছেন। এ সময় সেতুমন্ত্রী ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড, বিএনপির আমলে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।

সড়ক ও পরিবহনমন্ত্রী আরও বলেন, আজ মির্জা ফখরুল সাহেব বড় বড় কথা বলেন। দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বলতে চাই, কারও চিকিৎসার নামে জনগণকে জিম্মি করা যাবে না। কোনো ইস্যু সৃষ্টি করে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ, নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ তা প্রতিহত করবে।

বিএনপির আন্দোলন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশবিরোধী এ ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে প্রতিহত করতে সারা দেশের আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সতর্ক অবস্থান ও সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে। যারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করবে, আমরা তাদের সমুচিত জবাব দেব।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply